চট্টগ্রামে সংক্রমণ বাড়াচ্ছে ওমিক্রনের উপধারা

11

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের উচ্চ সংক্রমণশীল উপধারা ‘বিএ.২’ এর কারণে চট্টগ্রামে দ্রুত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির (সিভাসু) একদল গবেষক। ওমিক্রনের উপধারা ‘বিএ.২’ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন তারা।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি মূল্যায়ন নিয়ে একটি গবেষণায় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির (সিভাসু) এক গবেষণায় এমন তথ্য পেয়েছেন তারা। এ কারণে চট্টগ্রাম জেলায় সংক্রমণ ও আক্রান্তের হার বেশি বলেও দাবি করেছেন তারা।
গবেষক ও সিভাসুর সহকারী অধ্যাপক ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা জানান, গবেষণার অংশ হিসেবে নভেল করোনা ভাইরাসের ১০টি নমুনা সংগ্রহ করে সার্স-সিওভি-২ বা নভেল করোনা ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়। ১০টি নমুনার মধ্যে সবকটিতে ওমিক্রন (বি.১.১৫২৯) ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি মিলেছে। এর মধ্যে চারটি নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের অধিকতর সংক্রমণশীল বিএ.২ শনাক্ত হয়েছে।
ডা. ইফতেখার বলেন, ‘তিন ধরনের লিনিয়েজ (উপধারা) হয়। সেগুলো হল বিএ.১, বিএ.১.১, এবং বিএ.২। দুটি নমুনায় বিএ.১ এবং তিনটি নমুনায় বিএ.১.১ লিনিয়েজ শনাক্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিএ.২ সবচেয়ে বেশি সংক্রমণশীল।’
গত ২০ থেকে ২২ জানুয়ারির মধ্যে নগরীর নন্দনকানন, জালালাবাদ, কোতোয়ালী, চান্দগাঁও, বায়েজিদ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ ও চকবাজার এলাকার এবং হাটহাজারী উপজেলার মদনহাট, মাদার্শা ও ফটিকা এলাকার ১০ বাসিন্দার নমুনা নিয়ে এ গবেষণা করা হয়। ওই সময়ে জেলায় সংক্রমণের হার ছিল ৩৫ শতাংশের কাছাকাছি। এর মধ্যে ২৩ থেকে ৭৫ বছর বয়সী এসব ব্যক্তিদের প্রত্যেকের নমুনায় করোনা ভাইরাসের ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছেন।
ডা. ইফতেখার বলেন, এ জিনোমে ক্রমাগত মিউটেশন হতে থাকে। একটি নমুনায় সর্বোচ্চ ৬৮টি মিউটেশন শনাক্ত হয়েছে। অতিমাত্রায় মিউটেশনে এক পর্যায়ে জিনোম পরিবর্তনও হয়ে যেতে পারে।
সিভাসু উপাচার্য ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নির্দেশনায় এবং সিভাসু এর পোল্ট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টার (পিআরটিসি) এর আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এই গবেষণায় ছিলেন, সিভাসু’র অধ্যাপক ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. প্রণেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম ও ডা. তানভীর আহমদ নিজামী।
সিভাসুর গবেষক দলের সদস্যরা জানান, আক্রান্তদের মধ্যে যাদের নমুনা নিয়ে জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়েছে তাদের রোগের উপসর্গ খুবই মৃদু পর্যায়ের ছিল।
অধিকাংশের গলা ব্যথা, সর্দি ও মৃদু জ্বর ছাড়া মারাত্মক কোনো লক্ষণ যেমন, শ্বাসকষ্ট কিংবা অতিরিক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়নি। আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়নি এবং কোনো রোগী মৃত্যুবরণ করেনি।