চট্টগ্রামে আরও ৭৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে চট্টগ্রামে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮৯ জনে দাঁড়ালো।
রোববার (১৭ মে) কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ সহ চট্টগ্রামের তিনটি ল্যাব ৫০১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
এরমধ্যে বিআইটিআইডিতে ২৪৭টি, সিভাসুতে ৮৭টি, চমেকে ১৩০টি এবং কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজে ৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
এতে বিআইটিআইডিতে ৩৭ জন, চমেকে ৩০ জন এবং কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবে চট্টগ্রামের ৬ জনের শরীরে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। সিভাসুর ল্যাবে পরীক্ষা করা নমুনার মধ্যে ১২ জন পজেটিভ শনাক্ত হলেও তারা সকলেই অন্য জেলার বাসিন্দা।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজার ল্যাবসহ চারটি ল্যাবে ৫০১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে মোট করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে ৭৩ জনের।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এখনই সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি না হলে এই সংক্রমণ কোনোভাবে কমানো সম্ভব নয়। চট্টগ্রামে আইসোলেশনে ৫ জনের মৃত্যু : চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি’র আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৫ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে একজনের করোনা পজেটিভ ছিলো। বাকি ৪ জন করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। খবর বাংলানিউজের
গতকাল রোববার রাতে এসব তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব মাসুম এবং বিআইটিআইডি’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল হাসান।
জেনারেল হাসপাতলের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রব মাসুম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৩ রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। এদের মধ্যে নজরুল ইসলাম এবং বজল আহমেদের করোনা উপসর্গ ছিল। হেরু প্রভা বড়ুয়া করোনা পজেটিভ ছিলেন।
বিআইটিআইডি’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবুল হাসান বলেন, করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ২ জন গত শনিবার রাতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
তবে তাদের বিস্তারির তথ্য জানাতে পারেননি তিনি।
করোনা সন্দেহে চিকিৎসককে ‘ফেলে চলে গেলো’ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স : নগরের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) চিকিৎসাধীন থাকা ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জাফর হোসাইন রুমিকে করোনা সন্দেহে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় নিয়ে যায়নি।
ফলে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন শিশু রোগ বিভাগের এই মেডিক্যাল অফিসার। গতকাল রোববার বিকেল ৫টায় আগ্রাবাদ বহুতলা কলোনির মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
মা ও শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, দুইদিন আগে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালের শিশুরোগ বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাফর হোসাইন প্রথমে কেবিনে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাসেবা নেন।
কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয় শনিবার (১৬ মে) দুপুরে। এরপরও স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায় ঢাকায় নেয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কল করা হয়।
রোববার বিকেলের দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এসে মাঠে অবস্থান নেয়। এসময় এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ওই চিকিৎসককে তোলার সময় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষ জানতে পারে তার করোনার লক্ষণ আছে। পরে তাকে না নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি চলে যায়।
মা ও শিশু হাসপাতালের দায়িত্বরত ডা. রবিউল মোস্তফা জানান, ডা. জাফর হোসাইনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ এসেছে। দ্বিতীয় পরীক্ষার জন্য আবারও নমুনা নেওয়া হয়েছে। কয়েকদিন আগে শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।
তিনি জানান, শনিবার অবস্থার অবনতি হলে আজ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কল করা হয় ঢাকায় নেয়ার জন্য। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি এসে যখন জানতে পারে ডা. জাফর হোসাইনের করোনার লক্ষণ আছে তখন তাকে না নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স চলে যায়।
‘তার অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯০/৯২ এর উপরে না উঠায় মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাও দেয়া যাচ্ছে না। তার স্বাস্থ্যের অবস্থা খুবই ক্রিটিক্যাল।’
তবে এ বিষয়ে বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরীর বক্তব্য ভিন্ন। তার দাবি রাত হয়ে যাওয়ার কারণে তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ে যায়নি।