চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই

18

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রামে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ জন। এ নিয়ে চলতি মাসে ৩৩৮ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদেনে দেখা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৪৮৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৩১ জন পুরুষ, ১৩১ জন নারী এবং শিশু রোগী রয়েছে ১২৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৮৩ জন মহানগর এবং ৯৩ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। উপজেলার মধ্যে সীতাকুন্ডে সর্বোচ্চ ১৭ জন, সাতকানিয়ায় ১৬ জন, পটিয়ায় ১৫ জন, কর্ণফুলীতে ৯ জন, রাঙ্গুনিয়ায় ৮ জন, বাঁশখালীতে ৬, রাউজান, লোহাগাড়া ও হাটহাজারীতে ৪ জন করে, ফটিকছড়িতে ৩ জন, আনোয়রা, চন্দনাইশ, মিরসরাই ও সন্দ্বীপে ১ জন করে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রতিরোধের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু। এতে বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি। এক জেলায় যদি পুরো বছর পাঁচজন রোগী পাওয়া যায়, তাহলে ধরে নেওয়া যায়, আক্রান্ত রোগী অন্য জেলা থেকে এসেছে। তবে এর বেশি হলে ধরে নেওয়া হয় ডেঙ্গু স্থানীয়ভাবে ছড়িয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ডেঙ্গুর স্থানীয় সংক্রমণ এরই মধ্যে ৪০ জেলায় দেখা দিয়েছে। দেশজুড়ে যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, ডেঙ্গু মোকাবিলা করা কঠিন হবে। জনদুর্ভোগ ও মৃত্যু কোনোটাই সামলানো যাবে না। তাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এখনই জাতীয় কর্মকৌশল প্রণয়ন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সারাবছর অভিযান চালানো এবং কীটতত্ত্ব সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। চট্টগ্রাম জেলা ছাড়াও বিভাগের অন্যান্য জেলায়ও ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১১ জেলার মধ্যে এ পর্যন্ত সাতটিতে ১ হাজার ৭৯৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১ হাজার ১০০ জন কক্সবাজারের। চট্টগ্রাম বিভাগে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ২৩ জনের মধ্যে ১৮ জনই ওই জেলার।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াস চৌধুরী জানান, চলতি মাসে চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২৬ জন। গতকাল (রোববার) এ সংখ্যা ছিল ১৬ জন। চলতি মাসেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩৮ জন। আর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩ জন মারা গেছেন। জেলার চেয়ে নগরীতে ডেঙ্গু সংক্রমণ বেশি। ডেঙ্গ থেকে বাঁচতে সচেতন হতে হবে। লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন সংস্থাকে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম থেকে শুরু করে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছি। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখলে রোগের প্রকোপ কমে আসেবে।