চট্টগ্রামে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরোর আবাদ

10

আসহাব আরমান

চলতি মৌসুমে চট্টগ্রাম জেলায় ৬৮ হাজার ৯৯৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর সবচেয়ে বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এ বছর চট্টগ্রাম জেলায় আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৭ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে। এর আগে ২০২২-২৩ মৌসুমে চট্টগ্রামে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি এবং চাষাবাদ হয়েছিল ৬৬ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে। জমি চাষ ও রোপণ বাবদ খচর হয়েছে ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানান কৃষকরা। অনুকূল পরিবেশ ও লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ধান আবাদ হওয়ায় কাক্সিক্ষত ফলন হওয়ার আশা করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় হাইব্রিড ও (উচ্চ ফলনশীল) উফশী জাতের মিলিয়ে ৬৭ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এর মধ্যে ৪৫ হাজার ৪৭৯ হেক্টর জমিতে উফশী জাতের ধান ও ২১ হাজার ৫৩১ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড জাতের ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে এ বছর আবাদ হয়েছে ৬৮ হাজার ৯৯৯ হেক্টর জমিতে। এর আগে ২০২১ সালে ৫৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল; যা চলতি মৌসুমে নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৭ হাজার ১০ হেক্টর। অর্থাৎ তিন মৌসুমের ব্যবধানে চট্টগ্রামে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ বাঁশখালীতে ১১ হাজার ৪১৪ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বোরো আবাদে অতিরিক্ত পানি লাগার বিষয়টি পুরোপুরি সঠিক নয়। সেচের পানির হিসেবে কৃষক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রিত সেচ ব্যবস্থাপনায় প্রতি কেজি ধান উৎপাদন করতে এক হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ লিটার পানি লাগে। অপচয় বাদ দিয়ে শুধু ধানের উৎপাদনে প্রকৃত পানির খরচ হিসাব করলে প্রতি কেজি ধান উৎপাদন করতে ৫৫০-৬৫০ লিটার পানিই যথেষ্ট। এছাড়াও বোরোতে কম-বেশি সব কৃষকরাই লাভবান হয়। এছাড়া এবার লক্ষ্যমাত্রার ৬৮ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ধান আবাদ হবে। তাই এ মৌসুমে কাক্সিক্ষত ফলনের ব্যাপারেও আশা করা যাচ্ছে।
বাশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের কৃষক আশরাফ আলী পূর্বদেশকে জানান, আমরা অন্যান্য মৌসুমের মতো বোরোতেও সমানভাবে আবাদ করি। আবাদের সময় পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যায়। এ বছর আমি ৫ কানি (২০০ শতক) জমিতে বোরো আবাদ করেছি। জমি চাষ ও শ্রমিক মিলিয়ে কানি প্রতি ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি।
চট্টগ্রাম জেলা কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) মো. ওমর ফারুক বলেন, এই মৌসুমে ৬৮ হাজার ৯৯৯ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজর ৯৮০ হেক্টর বেশি। বোরো চাষাবাদে পানির সেচটা গুরুত্বপ‚র্ণ। কৃষকদের সেচের পানির সমস্যা নিরসণে কাজ চলছে। পাশাপাশি বোরো চাষীদের মাঝে সার ও বীজ বিতরণ করেছে কৃষি বিভাগ। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছর বোরো আবাদে ভালো ফলনের আশা করা হচ্ছে।