চট্টগ্রামে ‘আক্রান্ত বেশি’ ২১-৫০ বছর বয়সীরা

19

দেশে করোনা ভাইরাস শনাক্তের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ। গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। সে হিসাবে বাংলাদেশও করোনা মহামারির এক বছর অতিক্রম করছে। শুরুর দিকে সারাদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও ধীরে ধীরে মানুষ সচেতনতার সাথে করোনা মোকবেলায় সফল হয়েছে। ইতোমধ্যে সারাদেশে করোনার টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে দেশের প্রতিটি মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এই এক বছরে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জন। সারাদেশে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজার ৪৬২ জন।
গত এক বছরে চট্টগ্রামেও করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৫২ জন। এদের মধ্যে মহানগরে ২৭ হাজার ৯৫৮ জন এবং উপজেলায় ৭ হাজার ৫৯৪ জন। আক্রান্তদের অধিকাংশই ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সী। চট্টগ্রামে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৩৭৭ জন। প্রাণ হারানো অধিকাংশের বয়স ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে মোট আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ হাজার ৬১৫ জন পুরুষ এবং ১০ হাজার ৯৩৭ জন মহিলা। মোট আক্রান্তের ৬৯ দশমিক ২৪ শতাংশই পুরুষ। মোট আক্রান্তদের মধ্যে মহানগরে ২৭ হাজার ৯৫৮ জন এবং উপজেলায় ৭ হাজার ৯৫৪ জন। এদের মধ্যে ৭৮ দশমিক ৬২ শতাংশই মহানগরের বাসিন্দা। এদিকে চট্টগ্রামে করোনায় মারা যাওয়াদের মধ্যে ২৯১ জন পুরুষ এবং ৮৬ জন মহিলা। চট্টগ্রামে মৃতদের ৭৭ দশমিক ১২ শতাংশই পুরুষ। মৃতদের মধ্যে ২৭৬ জন মহানগরের বাসিন্দা এবং ১০১ উপজেলার বাসিন্দা।
চট্টগ্রামে আক্রান্তদের বয়স ভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ০ থেকে ১০ বছর বয়সী ৮৫৯ জন, ১১ থেকে ২০ বছর বয়সী ২ হাজার ৪৩৬ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৭ হাজার ৭১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ৮ হাজার ৪৭৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৬ হাজার ৭৩৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৫ হাজার ৪৪০ জন ও ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৪ হাজার ৫৩৬ জন। এদের মধ্যে ২২ হাজার ২৮১ জনই ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সী। যা মোট আক্রান্তের ৬২ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
চট্টগ্রামে করোনায় মৃতদের বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ০ থেকে ১০ বছর বয়সী ৪ জন, ১১-২০ বছর বয়সী ৪ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৫ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী ১৮ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী ৪৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী ৯১ জন ও ৬০ বছরের উর্ধ্বে ২০৫ জন। মোট মৃতের ২৯৬ জনই ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে। যা মোট মৃতের ৭৮ দশমিক ৭২ শতাংশ।
এ বিষয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রামে করোনা মহামারির শুরুর দিকে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিলো। চারিদিকে চিকিৎসা নিয়ে চলছিলো হাহাকার। তবে সময় বাড়ার সাথে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়তে থাকে। পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যবস্থায়ও যুক্ত হতে থাকে না না সুযোগ সুবিধা। বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে নগরীতে ১৭টি ও ৯ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো হয়েছে। নগরীর হাসপাতালগুলোতে ১০৮ টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা বেড মজুদ আছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১০টি করে আইসিইউ বেড বাড়ানো হয়েছে। যা করোনাকালীন সময়ের আগে ছিলো না।
তিনি বলেন, ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সীরা দিনের বেশির ভাগ সময় ঘরের বাইরে যায়। এছাড়াও যুবক শ্রেণির মানুষের মাঝে শনাক্তের হার বেশি হওয়ার কারণ তারা স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা দেখান। বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় মৃত্যুহার বেড়েছে।