চট্টগ্রামে আক্রান্তের ৭৫ শতাংশই দক্ষিণ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট

19

নগরীর জেনারেল হাসপাতালে এপ্রিল ও মে মাসে চিকিৎসা নিতে আসা ২৪ জন করোনা রোগীর ৭৫ শতাংশই দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া করোনা ভাইরাসের ‘বেটা ভ্যারিয়েন্টে’ আক্রান্ত। এছাড়া, ২৫ শতাংশ রোগী যুক্তরাজ্যের ‘আলফা ভ্যারিয়েন্টে’ আক্রান্ত ছিলেন। তবে গবেষণায় ভারতের ‘ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট’ এর উপস্থিতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সম্প্রতি উল্লেখিত রোগীদের নমুনা থেকে পাওয়া ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সে এসব তথ্য মিলেছে।
ঢাকার চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে জেনারেল হাসপাতাল এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনলজি বিভাগের গবেষকরা এ অনুসন্ধান চালান।
গবেষণায় দেখা যায়, ওই ২৪ জন রোগীর মধ্যে পাঁচজন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। টিকা নেওয়ার দুই সপ্তাহ পরেই তারা করোনায় আক্রান্ত হন। এদের সবার মধ্যে বেটা ধরন পাওয়া যায়। এছাড়া ২৪ জনের মধ্যে ১০ জন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা নেন। এই ১০ জনের ৮ জনই বেটা ধরনে আক্রান্ত ছিলেন।
গবেষক ডা. আবদুর রব জানান, চলতি বছরের এপ্রিল ও মে মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ২৪ জন কোভিড রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করে তাদের বিভিন্ন বিষয় পর্যবেক্ষণ করা হয়। এদের মধ্যে আইসিইউতে ভর্তি থাকা ১০ জন রোগী এবং মৃদু বা মধ্যম মাত্রায় অসুস্থ ১৪ জন, যারা আইসোলেশনে বা আউটডোর ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিয়েছেন। তিনি বলেন, রোগীদের মধ্যে ৭৫ শতাংশ বেটা ভ্যারিয়েন্টে ও ২৫ শতাংশ আলফা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত ছিলেন। তবে ভারতে পাওয়া ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। যেসব রোগীর আইসিইউ ও হাই-ফ্লো অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছিল, তাদের সবাই ছিলেন বেটা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। আলফা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের ৯০ শতাংশের জ্বর, কফ ও সর্দির উপসর্গ ছিল।
গবেষকরা জানান, তাদের করা জিনোম সিকোয়েন্সের ডেটা জার্মানি থেকে প্রকাশিত ভাইরাসের আন্তর্জাতিক তথ্যভান্ডার
গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটায় (জিআইএসএআইডি) গৃহীত হয়েছে।
গবেষণার নেতৃত্ব দেন চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা। প্রধান গবেষক ছিলেন জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের চিকিৎসক ডা. আবদুর রব ও ডা. এইচ এম হামিদুল্লাহ মেহেদী। সহ-গবেষক হিসেবে ছিলেন হাসপাতালের চিকিৎসক মো. মিনহাজুল হক ও রাজদীপ বিশ্বাস। এছাড়া গবেষণাটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আদনান মান্নান।