চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাত আরো সংহত হওয়া প্রয়োজন

21

দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার প্রতিবেদন হতে জানতে পারি বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের ফলে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাতের অগ্রগতি লক্ষ করা গেছে। প্রতিবেদনটি অযথার্থ নয়। বিগত মার্চ ২০২০ হতে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ে। যার ফলে ঢাকা, নারায়নগঞ্জের পাশাপাশি ধীরে ধীরে চট্টগ্রামেও তা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। যার কারণে চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি প্রাইভেট হাসপাতালগুলো প্রচন্ড চাপের সম্মুখিন হয়। প্রথম দিকে স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, নার্স সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে অনেকে। যার কারণে দেশের সংবাদ মাধ্যম কড়া সমালোচনামুখর হয়ে ওঠে। এর সুনির্দিষ্ট কারণ ছিল। চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থ্য এবং উপকরণের অভাব ছিল। সম্পূর্ণ একটা নতুন সংক্রামক এ রোগের আবির্ভাবের ফলে একটা আতঙ্ক স্বাস্থ্যখাতের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আসা স্বাভাবিক। ধীরে ধীরে চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসার নতুন সামগ্রী, নতুন নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজিত হয় হাসপাতালগুলোতে। জরুরি ভিত্তিতে লোকবল বৃদ্ধি করা হয় সরকারি-বেসরকারি এবং প্রাইভেট হাসপাতাল সমূহে। তার সাথে ল্যাব ও শয্যা সংখ্যাও সম্প্রসারণ করা হয়। সাধারণ রোগী এবং করোনা রোগীর চিকিৎসায় যেন বেগ পেতে না হয় এমন চিন্তা ও ব্যবস্থার ফলে স্বাস্থ্যখাতের গুণগত মান বৃদ্ধি পেতে থাকে।
আমরা জানি রাজধানী ঢাকার তুলনায় চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাত এখনো অনেকখানি দুর্বল। অথচ চট্টগ্রাম নানা কারণে রাজধানী ঢাকার চেয়ে কমগুরুত্ববহ মহানগরী নয়। শিল্প-কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক সমুদ্র বন্দরের গুরুত্ব বিবেচনা করলে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাত আরো শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। করোনার ভয়ানক সময়ে রোগী, লাশ পরিবহন, সৎকার ও অন্যান্য কাজে দেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা ব্যাপক ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে। বর্তমানে হাসপাতালসমূহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোভিড-১৯ জনিত সংকটে পড়ার পর যে উন্নতির দিকে পা বাড়িয়েছে তা যথার্থ নয়। আমরা মনে করি যেকোন বিশেষায়িত রোগীর চিকিৎসা ভালোভাবে অঞ্জাম দেয়ার মানসম্পন্ন চিকিৎসা চট্টগ্রামে থাকা জরুরি। চট্টগ্রামে সব ধরনের চিকিৎসার উন্নত সেবা থাকলে কাউকে বিদেশে গিয়ে দেশের টাকা বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে হয় না। ক্যান্সার, হৃদরোগ ইত্যাদি ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসার বিষয়ে চট্টগ্রামে আরো সরকারি উদ্যোগ ও সহায়তা জরুরি।
বিগত এক বছর হাসপাতালের ধারণক্ষমতা বেড়েছে। কিছু প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়েছে যা জনবহুল মহানগরী চট্টগ্রামের জন্য যথেষ্ট নয়। সরকার এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামের স্বাস্থ্যখাতকে আরো সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে, এমন দাবি বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর।