চট্টগ্রামসহ সারাদেশের মানুষকে কোভিড-১৯ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে

37

দেশে লকডাউন পরিস্থিতি এক প্রকার উঠে যাওয়ায়, সাধারণ মানুষ মনে করছে করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ব্যতিত, সকল সেক্টরে করোনা সংক্রমণ ভীতির পরিবেশ নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই। সবক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাধ্যবাদকতা উন্মক্ত এখন। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোও খুলে দেয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণের সংখ্যা কিছুটা কমে আসতেও দেখা যায়। তবে উত্তর কোরিয়ার প্রধামন্ত্রীর মতো আমরা বলতে পারছি না, দেশ হতে করোনা পালিয়েছে কিংবা আমাদের দেশে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ নেই। বাজার ব্যবস্থা, কর্মক্ষেত্র, অফিস-আদালত, পর্যটন, সব খুলে দেয়ার পরও দেখা গেছে দেশে করোনার রোগী সনাক্ত হচ্ছে এবং করোনায় প্রতিদিনই দেশের বহু নর-নারী মৃত্যু বরণ করছে।
শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ে, এটা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সাধারণ বক্তব্য। এখনো দেশে শরৎকাল, শীত আসেনি। দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি ‘শীতের আগেই চট্টগ্রামে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা ভাইরাস। এক পর্যায়ে চট্টগ্রামে করোনা রোগী সনাক্তের সংখ্যা শতকরা ৫-৬ শতাংশে নেমে এসেছিল। বর্তমানে তা ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। সামনে শীতকাল। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা আরো বাড়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। দেশে ১৭ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন খাওয়ানো কিংবা টীকা দেয়া সম্ভব নয়। ভ্যাকসিন আবিষ্কারের খবর পাওয়া গেলেও তা বাংলাদেশের মানুষ কখন পাবে তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। করোনা ভাইরাস রোধে ভ্যাকসিন দেশে পাওয়া গেলেও দেশের সকল মানুষ ভ্যাকসিন নিতে সক্ষম হবে না। দেশের অধিকাংশ মানুষের কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন কেনার সার্মথ্য নেই।
শীতের কথা মাথায় রেখে চট্টগ্রামসহ দেশের সকল নর-নারীর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। দেশের ১৭ কোটি মানুষকে করোনার ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব না হলেও দেশের ১৭ কোটি মানুষ মাস্ক ব্যবহার করতে পারে। ৩টাকা ৫টাকা মূল্যে একটা মাস্ক কেনার সার্মথ্য সবার আছে। সরকারি উদ্যোগেও জনগণের কাছে মাস্ক সরবরাহ করা সম্ভব।
দেশের করোনা সংক্রমণের পর মার্চ ২০২০ হতে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সাহস সরকার দেখাতে পারছে না। বহু দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর আবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এমন নজির বহু দেশের রয়েছে। এ কথা আমরাও স্বীকার করি। সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের চেয়ে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা অনেক সচেতন। যার প্রমাণ ইতোপূর্বে আমরা দেখেছিও। প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া উচ্চ বিদ্যালয় হতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হলে করোনা সংক্রমণ বাড়বে বলে মনে হয় না। স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাদকতাসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে দেশের একাডেমিক শিক্ষাকে বাঁচিয়ে রাখা জরুরি। সকলেই মাস্ক ব্যবহার করলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা দেশে মহামারী হিসেবে ব্যাপকতা লাভ করবে না এমন ধারণা বিশেষজ্ঞদের।