চকরিয়া পৌর শহরে বখাটে ও ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য

22

চকরিয়া পৌরশহরের সোসাইটি বাজারে সাড়ে তিনশত টাকা পকেটে নিয়ে গতকাল বুধবার বিকালে বাজার করতে আসেন যুবক লিয়াকত আলী (২২)। উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্যারচর সিকদার পাড়া এলাকা থেকে বাজার করতে আসেন তিনি। লিয়াকত আলী চকরিয়া নিউ মার্কেটের সামনে পৌঁছলে সেখানে দাঁড়ানো কয়েকজন বখাটে যুবক তাকে ডেকে নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি খালি ইজিবাইকে (টমটম) তুলেন। সেখানে বখাটেরা লিয়াকতকে তার বাড়ি কোথায় জিজ্ঞাসা করলে তিনি লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্যারচর সিকদার পাড়া এলাকায় বলে জানান। তখন বখাটেরা তাকে খারাপ মেয়ের সাথে কথা বলার কৈফিয়ৎ তুলে কিলঘুষি দিয়ে নাজেহাল করা শুরু করে। একপর্যায়ে বখাটেরা তার কাছে থাকা নগদ সাড়ে তিনশত টাকা কেড়ে নেয়। পরে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। লিয়াকত আলী বলেন, বাড়ি থেকে সাড়ে তিনশত টাকা পকেটে নিয়ে সোসাইটি বাজারে কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন তিনি। বিকাল সোয়া তিনটার দিকে নিউ মার্কেটের সামনে কয়েকজন বখাটে যুবক তাকে একটি ইজিবাইক (টমটম) গাড়িতে তুলে কিলঘুষি মেরে টাকাগুলি ছিনিয়ে নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। বিষয়টি আশপাশের লোকজন বুঝতে পারলেও তারা কেউ এগিয়ে আসেননি। ফলে সেদিন শূন্যহাতেই বাড়ি ফিরতে হয় তাকে।
চকরিয়া পৌর সদরের কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সম্প্রতি চকরিয়া পৌরশহরের বিভিন্ন মার্কেটের অলিগলিতে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে এসব ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল এলাকা থেকে পৌর সদরের মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা অসংখ্য নারী-পুরুষদের সর্বস্ব খুঁইয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। অনেক সময় সর্বস্ব হারিয়ে গাড়ি ভাড়া না থাকায় তাদের বাড়িতে ফিরতে অন্যজনের কাছে হাত পাততে হয়েছে। এছাড়া স্কুল কলেজ ছুটির পর বাড়িতে যাওয়ার জন্য মার্কেটের পাশ দিয়ে হেঁটে গাড়িতে উঠার সময় ছাত্রছাত্রীরাও এসব ছিনতাইকারীর কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, ছিনতাইকারীরা এসব অপকর্ম সংগঠিত করতে বিভিন্ন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে থাকে। এ চক্রের কয়েকজন সদস্য কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন মার্কেটে অবস্থান নেয়। তাদের সাথে কয়েকজন নারী সদস্যও রয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে স্বামী-স্ত্রী মার্কেটে আসলে তাদের চিহ্নিত করে তারা। কৌশলে ছিনতাইকারীরা মার্কেটে আসা স্ত্রীকে আলাদা করে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে রেখে স্বামীকে আপনার সাথে কথা আছে বলে অন্য জায়গায় ডেকে নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে মারধর ও লাঞ্চিত করে পকেটে থাকা নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। এসময় কোন ব্যবসায়ী প্রতিবাদ করলে তাকেও নাজেহাল হতে হয়।
ব্যবসায়ীরা বলেন, দিনদুপুরে এভাবে প্রতিদিন ছিনতাইকারীর দৌরাত্ম্য চলতে থাকলে মার্কেটে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়বে। লোকজন ভয় পাবে মার্কেটে আসতে।
চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) এ কে এম শফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, চকরিয়া পৌর সদরে ছিনতাই সংক্রান্ত কোন ব্যাপারে কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও যদি এ রকম কোন ঘটনা ঘটে তাহলে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওসি তদন্ত আরও বলেন, এখন থেকে পুলিশের একটি টিম নিয়মিত মার্কেটে টহল দিবে। এসময় কাউকে ছিনতাইকারী সন্দেহ হলেই সাথে সাথে তাদের আটক করা হবে বলেও জানান তিনি।