চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দৌড়-ঝাঁপ

299

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের পদচারণায় আবারও সরগরম হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের চকরিয়া। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের সম্ভাব্য কোন নেতাকর্মীকে এখনো পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মাঠে দেখা না গেলেও নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রায় ৬ জন সম্ভাব্য প্রার্থীরা কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন। ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌর সভা নিয়ে গঠিত বিশাল চকরিয়া উপজেলার আনাচে কানাচে গিয়ে এসব সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি চালাচ্ছেন ব্যাপক গণসংযোগ।
নির্বাচনের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত না হলেও নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী মার্চ মাসেই অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ছিনিয়ে আনতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের এসব সম্ভাব্য প্রার্থী ইতোমধ্যে দলীয় হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। চকরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রতিদ্ব›িদ্বতাকারী যে ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম দলীয় নেতাকর্মীদের মুখে শুনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফাঁসিয়াখালীর ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি শ্রমিক নেতা ফজলুল করিম সাঈদী, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও চকরিয়া বর্ণমালা একাডেমির চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ দুলাল, চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কক্সবাজার জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাহেদুল ইসলাম লিটু এবং চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কচির।


এসব সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম ২০০৯ সালের নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের বর্তমান নবনির্বাচিত সাংসদ ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম। এ ছাড়া চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন থেকে পরপর তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি দলের উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফজলুল করিম সাঈদী দুইবার চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি পৌরসভার মেয়র পদে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। ওইসময় চকরিয়া উপজেলা ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অনুরোধে দল মনোনীত মেয়র প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে থেকে তিনি চকরিয়ায় বিএনপি জামায়াতের অপরাজনীতির বিরুদ্ধে নতুন সাংসদ জাফর আলমের সাথে রাজপথে ভূমিকা রেখে আসছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের অপর সদস্য চট্টগ্রাম সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের জনপ্রিয় সাবেক ছাত্রনেতা আমিনুর রশিদ দুলাল আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি অতীতে কোনদিন স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তবে ২০১৬ সালে চকরিয়া পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলমগীর চৌধুরীকে মেয়র পদে নির্বাচিত করতে বেশ ভূমিকা রেখেছেন। সম্ভাব্য চেয়াম্যান প্রার্থীর মধ্যে চকরিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা জাহেদুল ইসলাম লিটু ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কক্সবাজার জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হন।


বর্তমানে তিনি কক্সবাজার জেলা পরিষদের এক নম্বর প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি চকরিয়া পৌরসভার কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র ছিলেন। অপর সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় রয়েছেন বর্তমান চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কচির। এর আগে তিনি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্র এবং তরুণদের কাছে এখনো খুবই জনপ্রিয় এ তরুণ যুবলীগ নেতা। এসব প্রার্থীদের মধ্যে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে কে হবেন আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার মাঝি এখন সেদিকেই চেয়ে আছে চকরিয়ার ভোটাররা। তবে আওয়ামীলীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের দাবি, এবারের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দুঃসময়ে যারা আওয়ামী লীগের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন, রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন এবং জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে তাদের মনোনয়ন দেয়া হোক।