চকরিয়ায় সালিশী বৈঠকে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

14

চকরিয়া প্রতিনিধি

কক্সবাজারের চকরিয়ায় সালিশী বৈঠকে গিয়ে প্রতিপক্ষের হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন মো. জয়নাল আবেদীন বদন (৪০) নামে এক যুবক। বিবাদী গ্রুপের লোকজন তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরো তিনজন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল রবিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে সমবায়ি সংগঠন চকরিয়া উপজেলার বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির কার্যালয়ের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) তফিকুল আলম আলম ও চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি।
নিহত মো. জয়নাল আবেদীন বদন উপজেলার উপকূলীয় বদরখালী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের টুঠিয়াপাড়া এলাকার মৃত আবদুস সোবাহানের ছেলে। এছাড়া আহতরা হলেন নিহতের ছোট ভাই মো. এহেসান (২৮), মোহাম্মদ ওসমান গণি (২৪) ও তাদের ভাতিজা মোহাম্মদ সাগর (২৫)।
এদিকে এ নির্মম খুনের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. সাগর নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আটক সাগর ওই এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, বদরখালী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের টুটিয়াপাড়া এলাকার মৃত আবদুস সোবাহানের ছেলে জয়নাল আবেদীন বদন প্রতিপক্ষ আবদুল জলিলের ছেলে মোহাম্মদ ছোটন গ্রæপের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। এ বিরোধ নিরসনের জন্য রবিবার সকালে বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির কার্যালয়ে গিয়েছিলেন জয়নাল আবেদীন বদন ও তার ভাইয়েরা। পরে প্রতিপক্ষের লোকজনও সেখানে উপস্থিত হয়। সালিশী বৈঠকের একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ আবদুল জলিলের ছেলে মোহাম্মদ ছোটন, মোহাম্মদ সাগর ও মোহাম্মদ রাজিব হঠাৎ দা ও ছুরি নিয়ে জয়নাল আবেদীন বদন ও তার ভাইদের উপর হামলা চালায়। এ সময় তারা বদন ও তার আত্মীয়-স্বজনদের এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে ও কুপিয়ে আহত করে। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন বদনকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি দুই ছেলে এক মেয়ের জনক ছিলেন। এছাড়া গুরুতর আহত অপর তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
নিহতের ভাই আব্দুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, শালিসী বৈঠকে হামলার আশঙ্কার বিষয়টি বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির সাধারণ সম্পাদককে জানানো হয়েছিলো। তিনি কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় অভিযুক্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হতে হলো আমার ভাইকে।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, বদরখালী সমিতির কার্যালয়ে যুবককে কুপিয়ে হত্যার খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) তফিকুল আলম আলমসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। পরে লাশ উদ্ধারের পর নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি শেষে তার মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. সাগর নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আটক সাগর ওই এলাকার আবদুল জলিলের ছেলে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলমান রয়েছে।