চকরিয়ায় গৃহবধূ মেরিনা খুন ঘাতক স্বামী আটক

50

কক্সবাজারের চকরিয়ায় যৌতুকের জন্য স্বামীর হাতে মেরিনা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূ খুন হওয়ার ঘটনায় ঘাতক স্বামী মিজানুর রহমানসহ চারজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের পিতা মনোর আলম বাদী হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ঘাতক মিজানুর রহমান ছাড়াও তার ভাই মো. আরফাত, পিতা মো. হাসান আলী ও মা নুরুন্নাহার বেগমকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা সবাই উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চরণদ্বীপ চারাইল্যাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে থানার এসআই তুষ্ট লাল বিশ^াসকে।
থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বাদি দাবি করেন, আমার মেয়ে মেরিনা আক্তারের (২১) গত ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিলে বিয়ে হয়। বিয়ের পর কিছুদিন স্বামীর সংসারে শান্তিপূর্ণভাবে সংসার জীবন অতিবাহিত করলেও গত এক বছর পূর্বে যৌতুকের টাকার জন্য আমার মেয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে স্বামীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এক পর্যায়ে আমার মেয়ে মেরিনার সংসার জীবনের কথা চিন্তা করে বাধ্য হয়ে তার স্বামীর হতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দিই। এছাড়া গত ৭ মাস পূর্বে আমার মেয়ের ডেলিভারির সময় সিজার অপারেশন হলে হাসপাতালে খরচ বাবত আরো ৩৫ হাজার টাকা প্রদান করি। পরবর্তীতে তারা যৌতুক হিসেবে আরো ১ লাখ টাকা দাবি করলে আমি তাতে অপারগতা প্রকাশ করি। গত ১ ডিসেম্বর স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেয়ের বিয়ের সময় দেন মোহর হিসেবে দেয়া ৪ ভরি স্বর্ণালংকার জোর পূর্বক ছিনিয়ে নিতে চাইলে আমার মেয়ে তাদের বাঁধা দেয়। এক পর্যায়ে তারা আমার মেয়েকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করে হত্যার হুমকি দিলে সে বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে বিষয়টি মোবাইল ফোনে আমাদের জানায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেরিনার স্বামী ও অন্যরা গলাটিপে ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে আমার মেয়েকে হত্যা করে। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাতে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরপরই পুলিশ হাসপাতাল এলাকা থেকে স্থানীয় জনতার সহায়তায় মেরিনার ঘাতক স্বামী মিজানুর রহমানকে আটক করে। পরে ময়না তদন্ত শেষে আমার মেয়েকে দাফন করা হয়।
নিহত মেরিনা আক্তারের মা দিলনূর বেগম বলেন, যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে এত অল্প বয়েসে খুন হতে হবে তা কখনো ভাবতেও পারিনি।
চকরিয়া থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মেরিনা হত্যামামলায় মেরিনার স্বামী ও মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমানকে আটক করা হয়েছে। তাকে আদালতের কাছে সোপর্দ করা হয়। এ মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।