ঘুষ না পেয়ে কর্মসৃজন প্রকল্পের কর্মবন্ধ

14

উখিয়া প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার নুর বানুর বিরুদ্ধে ঘুষের টাকা না পেয়ে সরকারি কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ বন্ধে করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, কর্মসংস্থান ও কর্মসৃজন (ইজিপিপি+) প্রকল্প হচ্ছে অতি দরিদ্রদের জন্য। এসব প্রকল্পে দৈনিক ৪০০ টাকা মজুরিতে কাজ করে শ্রমিকেরা। এই কর্মসৃজনে ৩৭ নাম্বার প্রকল্পের সভাপতি নুর বানু মেম্বার।
অভিযোগ উঠেছে, ওই প্রকল্পে শ্রমিকেরা কাজের মজুরি পাওয়ার পর নুর বানু মেম্বারের চাহিদা পূরণ না করায় অর্থাৎ তার অবৈধভাবে দাবিকৃত টাকা শ্রমিকেরা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে শ্রমিকদেরকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
শ্রমিকেরা অভিযোগ করেছেন, গত ৫ এপ্রিল ওই প্রকল্পের শ্রমিক সর্দার যথারীতি হাজিরা নিতে গেলে মহিলা মেম্বার নুর বানু জোরপূর্বক হাজিরা খাতা কেড়ে নেয়। ওই সময় প্রকল্প থেকে শ্রমিকদের তাড়িয়ে দেয় এবং প্রকল্পে কোনো ধরনের কাজ না করার জন্য অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ কাজ বন্ধের ঘোষণা দেয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অসহায় শ্রমিক জানিয়েছেন, ৩৭ নাম্বার প্রকল্পে কোনো শ্রমিক কাজ করতে গেলে তাদেরকে নুর বানু মেম্বারের বাহিনী দিয়ে মারধর করা হবে বলে হুমকি প্রদর্শন করেন।
সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে মেম্বার নির্বাচিত হয়ে সরকারের প্রতিটি প্রকল্পে দুর্নীতি করার সুযোগ খুঁজে বেড়াচ্ছেন মহিলা মেম্বার নুর বানু। গত ডিসেম্বরের ৪ তারিখ থেকে কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
অভিযোগ উঠেছে, মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় তার মাদক কারবারি ছেলেদের নিয়ে ইচ্ছামতো দায়িত্ব পরিচালনা করছেন। নুর বানু মেম্বারের একাধিক সন্তান রয়েছে যারা প্রত্যেকেই মাদক কারবারে জড়িত এবং মাদক সংশ্লিষ্ট মামলার আসামি। যাদের রয়েছে অঢেল অবৈধ সম্পত্তি।
এছাড়াও স¤প্রতি গরিবের টিসিবি পণ্যের তালিকায় স্বজনপ্রীতি ও বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে এবং মহিলাদের প্রেগন্যান্সি ভাতার জন্য ২ থেকে ৩ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এসব অনিয়মের ব্যাপারে জানতে তার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন পাওয়া যায়। একাধিকবার চেষ্টার পরও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরীর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি প্রকল্প বন্ধের অভিযোগ পেয়েছি শ্রমিকদের নিকট থেকে। প্রকল্প সভাপতি তার প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়ে থাকলে, সেটা যাচাই-বাছাই করে ঘটনার সত্যতা পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানান তিনি।
প্রকল্প বন্ধের বিষয়ে উখিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনো জানি না। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।