ঘুমের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি

14

আধুনিক যান্ত্রিক জীবনের প্রভাবে আমাদের শারীরিক ও মানসিক চাপ, দীর্ঘমেয়াদি রোগ বেড়ে চলেছে। সেই সঙ্গে ঘুমের সমস্যাও প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। অনেকেই ঘুমের ওষুধের ওপর ধীরে ধীরে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। কিন্তু ঘন ঘন ঘুমের ওষুধ সেবন শরীরে কতটা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে, সে ব্যাপারে সম্যক ধারণা থাকা জরুরি।
আমরা কেন ঘুমের ওষুধ খাই: দীর্ঘদিন রাতে ঘুমের সমস্যা হলে, দীর্ঘ ভ্রমণের সময়, রাতে বারবার ঘুম ভেঙে গেলে।
কাদের ঘুমের ওষুধ খাওয়া বারণ : যারা নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন, যারা লিভারজনিত জটিল রোগে ভুগছেন, যারা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, অনেক বয়স্ক ব্যক্তি, খিঁচুনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী, দুগ্ধ দানকারী মা। ঘুমের ওষুধ ছাড়া যেভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়: শারীরিক বা মানসিক যে কারণে ঘুমের সমস্যা হচ্ছে, তা আগে খুঁজে বের করে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ে ঘুমাতে যেতে হবে। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। দিনের বেলা ঘুমানো যাবে না, মেডিটেশন বা ধ্যান, ঘুমাতে যাওয়ার ন্যূনতম আধঘণ্টা আগে ইলেকট্রনিক যন্ত্র থেকে দূরে থাকতে হবে, ধূমপান বা অন্য যেকোনো নেশাজাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। চা, কফি বা যেকোনো ক্যাফেইন-সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
ঘুমের ওষুধ খাওয়ার ফলে যেসব সমস্যা হতে পারে: মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, ঘুম ঘুম ভাব, অ্যালার্জির সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি, স্মৃতিশক্তি লোপ, আত্মহত্যার প্রবণতা বৃদ্ধি, চিন্তা-ভাবনার পরিবর্তন হওয়া, যেমন: হ্যালুসিনেশন।
দীর্ঘদিন ঘুমের ওষুধ খেলে যে সমস্যা হতে পারে: ওষুধে নির্ভরশীলতা, ওষুধে আসক্তি। দীর্ঘদিন ওষুধ খেলে নির্ভরশীলতা তৈরি হওয়ার কারণে ওষুধ না খেলে নিদ্রাহীনতা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া দুশ্চিন্তা বেড়ে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া-এসব সমস্যাও হতে পারে।
কিছু ওষুধ ধীরে ধীরে বন্ধ করতে হয়। হঠাৎ করে ওষুধ বন্ধ করার ফলে মানসিক অবসাদ, জ্বর, কাশি, ঠান্ডা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা, সারা শরীরে চুলকানিসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) ব্যতীত যে ওষুধগুলো বিক্রি করা যায় না, ঘুমের ওষুধ তার মধ্যে অন্যতম। ঘুমের ওষুধের ফলে দেহে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঘুমের ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকা জরুরি।