গ্রাহক হয়রানি আকার বাড়ল ওয়াসার তদন্ত কমিটির

39

সামগ্রিক গ্রাহক হয়রানি ও এনআরডব্লিও (পানির অপচয়) বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দুইমাসের অধিক সময় কাজ করে অনেকগুলো সমস্যা খুঁজে পায়। এ অবস্থায় অধিকতর তদন্তের স্বার্থে কমিটির আকার বাড়ানো হয়েছে। মাঠপর্যায় থেকে সমস্যাগুলো তুলে আনতে এবার একযোগে কাজ করবে তদন্ত কমিটি। গ্রাহকের সব সমস্যা ও হয়রানির চিত্র তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত জুনে ওয়াসার ৫১তম বোর্ড সভায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তী বোর্ড সভার আগেই তদন্ত কাজ শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয় কমিটিকে। ওয়াসার বোর্ড সদস্য জাফর আহমদ সাকেদকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে রাখা হয় ওয়াসার ডিএমডি (ফাইনান্স) নুরুল আলম চৌধুরী ও প্রধান প্রকৌশলী ইয়াকুব সিরাজউদদোল্লাহকে। কমিটি তদন্ত কাজ শুরুর পর নানামুখী সমস্যা দেখতে পায়। সরেজমিনে পরিদর্শন, মোবাইলে ও ই-মেইলে অভিযোগ নেওয়া শুরু করে। এ কারণে কমিটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে পারেনি। ফলে তদন্ত কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য কমিটি শক্তিশালী করার প্রস্তাব করা হয় বোর্ড সভায়। সভায় সর্বসম্মতিতে বোর্ড সদস্য এএফএম কবির আহমেদ, মহসীন কাজী ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক পিযুষ দত্তকে তদন্ত কমিটির সদস্যভুক্ত করা হয়। এ কমিটি আগামী বোর্ড সভায় তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
ওয়াসার বোর্ড সদস্য ও তদন্ত কমিটির প্রধান জাফর আহমদ সাদেক বলেন, তদন্ত কাজ এখনো শেষ করা সম্ভব হয়নি। কমিটির আকার বাড়ানো হয়েছে। নতুন করে আরো তিনজনকে সদস্য করা হয়েছে। আমরা অনেকগুলো সমস্যা খুঁজে পেয়েছি, আরো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। কমিটির সবাইকে নিয়ে মিটিং করা হবে। মাঠপর্যায়ে কাজ করা হবে। আশা করছি প্রকৃত চিত্রটি আমরা তুলে আনতে পারবো।
মূলত এনআরডবিøও (পানির অপচয়) দিন দিন বেড়ে যাওয়ার উদ্বেগ থেকেই তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তাব আসে বোর্ড সভায়। পানি উৎপাদন, বিতরণ ও বিলের মধ্যে ফারাক দেখা দেয়। এমনকি উৎপাদিত পানির অর্ধেকেরও বেশি অপচয় বা চুরির অভিযোগ উঠে। অনেক গ্রাহকের গড় বিল, মিটার ছাড়া সংযোগ, অস্তিত্ববিহীন সংযোগ এসবের আড়ালে প্রকৃত এনআরডব্লিও ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া পাম্প অপারেটরদের অদক্ষতা, মিটার রিডিং না দেখেই বিল করা, গড় বিল করা ইত্যাদি কারণে প্রকৃত এনআরডব্লিও আড়ালে থাকছে বলে দাবি করা হয় ওয়াসার বোর্ড সভায়। যদিও পানির অপচয় বা চুরির বিষয়টি তদন্তাধীন কিন্তু এরই মধ্যে পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব তুলেছে ওয়াসা। যেটি মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য ও ওয়াসার ডিএমডি (ফাইনান্স) নুরুল আলম চৌধুরী বলেন, কমিটিতে কাউন্সিলর, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখন কমিটি সবাইকে নিয়ে বসবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে করণীয় ঠিক করবে।