গ্রামে গ্রামে টিকা দেয়ার প্রস্তুতি স্বাস্থ্য বিভাগের

44

ফারুক আবদুল্লাহ

গ্রামের সাধারণ জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে আগামী মাসের প্রথম দিকে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে করোনা টিকা প্রদানকারীদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, অনেক আগেই এ কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন ছিল। দেরিতে হলেও মাঠ পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম যেহেতু সিদ্ধান্ত হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার। এ কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই করোনা সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এজন্য অবশ্যই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত কার জরুরি।
এদিকে গত ২৮ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও লাইন ডাইরেক্টর এবং করোনা ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব ডা. মো. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিপুল জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনতে সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার ওয়ার্ডে টিকা প্রদান করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, সিটি কর্পোরেশন এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত ইপিআই টিকাদান কেন্দ্র ঠিক রেখে সপ্তাহে ছয়দিন করোনা টিকাদান কেন্দ্র চলবে। প্রতিদিন ওয়ার্ডের তিনটি স্থানে তিনটি কেন্দ্র চালু থাকবে। প্রতিটি কেন্দ্রে ১টি করে টিম টিকা প্রদান করবে। টিমের মধ্যে ২ জন টিকা প্রদানকারী ও ৩ জন স্বেচ্ছাসেবী থাকবেন। এই টিম সপ্তাহে একই কেন্দ্রে ৬দিন টিকা প্রদান করবে। আর ইউনিয়ন ও পৌরসভা পর্যায়ে সপ্তাহের যে কোনো তিনদিন একটি টিকাদান কেন্দ্রে ৩টি টিমে টিকা প্রদান করা হবে। প্রতিদিন সকাল নয়টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকা প্রদানের জন্য একটি নির্দেশনা এসেছে। তবে এতে কার্যক্রম কখন থেকে শুরু করা হবে তা উল্লেখ করা হয়নি। শুধু টিকা প্রদানকারীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করার জন্য বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, গ্রাম পর্যায়ে টিকা প্রদানের জন্য একটি নির্দেশনা এসেছে। এই নিদের্শনায় টিকাদান কেন্দ্র বাড়ানোর কথাও উল্লেখ রয়েছে। ইতোমধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে টিকা প্রদানকারীদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ধাপেধাপে বাকিদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। এরপর স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা পেলে ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সচিবালয়ে করোনা প্রতিরোধে ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়ন বিষয়ে এক পর্যালোচনা সভা শেষে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনার টিকা দেয়া হবে বলে জানান। ওইদিন তিনি আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে করোনার টিকা নেওয়া যাবে বলে ঘোষণা দেন। এর আগে দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাকেন্দ্র স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করা হবে। যাদের এনআইডি নেই তাদেরও বিশেষ পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এনে টিকা দেওয়া হবে। এ কাজের সঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করা হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।