‘গুম’ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূলের প্রধান হাতিয়ার

7

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘গুম’ এখন বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর কাজীর দেউরী নূর আহম্মদ সড়কে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি যৌথভাবে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, গুম এখন বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার প্রধান হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারিরা এই হাতিয়ার ব্যবহার করছে যথেচ্ছভাবে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে অব্যাহতভাবে গুম করা হচ্ছে বিভিন্ন পেশার মানুষকে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে ফেরত দিলেও বাকীরা এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। সাবেক এমপি ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, কাউন্সিলর চৌধুরী আলম, বোয়ালখালীর নজরুল ইসলাম বাচাসহ ছাত্র, যুবক, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, মুক্তমনা মানুষকে গুম করা হয়েছে। মানুষের এখন জীবনের কোন নিরাপত্তা নেই। এইসব গুমের সাথে রাষ্ট্র জড়িত। বাংলাদেশে শত শত গুমের হোতা হচ্ছে সরকারি এজেন্সীগুলো। গুম হচ্ছে অখন্ড কর্তৃত্ববাদী বর্বর শাসনেরই অনুসঙ্গ। গুম হওয়া পরিবারগুলো অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে তাদের প্রিয়জনকে ফেরত পাওয়ার জন্য।
মানববন্ধনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার বলেন, বাংলাদেশে বর্তমান সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই গুমের শিকার হয়েছে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা। গুম করা মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত। দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসলেই জবাবদিহিতা ফিরবে এবং গুমের অবসান হবে। দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জনগণের মিলিত কন্ঠে বর্তমান অপশাসনের অবসানের জন্য আওয়াজ তুলতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের নিপীড়নের সব অস্ত্র এখন বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। হত্যা, গুম থেকে শুরু করে মিথ্যা মামলায় দিয়ে কারাগারে পাঠানোর মতো কর্মসূচি অত্যন্ত সফলভাবে বাস্তবায়ন করছে আওয়ামী সরকার। নিজেদের ক্ষমতাকে কন্টকমুক্ত করার জন্য বিরোধী দলের অস্তিত্বকে দেশ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলতে সর্ব শক্তি নিয়োগ করেছে তারা। বিএনপি নেতাকর্মীদের নির্বিঘ্নে চলাচল করার অধিকারও কেড়ে নিয়েছে তারা।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এম এ আজিজ, যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস এম সাইফুল আলম, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইস্কান্দার মির্জা, আবদুল মান্নান, উত্তর জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক এম এ হালিম, অধ্যাপক ইউনুস চৌধুরী, সালাউদ্দিন, নুরুল আমিন, নূর মোহাম্মদ, নুরুল আমিন চেয়ারম্যান, ইঞ্জি. বেলায়েত হোসেন, সরোয়ার আলমগীর, কাজী সালাউদ্দিন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি নজরুল ইসলাম বাচা চেয়ারম্যানের স্ত্রী-সন্তানসহ অন্যান্য গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।