গুদামে ফিরল লুট হওয়া পৌনে ২ কোটি টাকার ‘কাজু বাদাম’

65

ব্যবসায়িক লাভের জন্য খাটানো টাকা উদ্ধার করতে এক ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে পৌনে ২ কোটি টাকার কাজু বাদাম লোপাট করার ঘটনায় মামলার পর বাদামগুলো দ্রুত জব্দ করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিল পুলিশ। বাদামের চালান জব্দ করার পর আদালতের নির্ধারিত দিনেই প্রতিবেদন জমা দেয় কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পরে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর জিম্মায় উদ্ধার করা বাদামগুলো দেয়া হয়।
গুদাম থেকে এ লোপাটের ঘটনায় খোদ পুলিশও নড়েচড়ে বসে। লোপাটকারীরা প্রভাবশালী হলেও ছাড় দেয়নি পুলিশ। এ নিয়ে কোতোয়ালি থানায় দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি দায়ের করেন বান্ডেল রোড এলাকার শাকিল আহমেদ তানভীর নামে এক ব্যবসায়ী। আসামিরা হলেন-শহীদুল হক ও জাবেদ আলম।
মামলার এজাহার : ৮ ফেব্রূয়ারি রাত সোয়া ১২টায় সাকিল আহমেদ তানভীর বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, ২৮ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টায় ৬ হাজার ৭২০ কেজি প্রক্রিয়াজাতকৃত কাজু বাদাম লুট করে তার পতেঙ্গাস্থ কারখানা থেকে। দেশের একমাত্র আর্ন্তজাতিক মানের এ কাজু বাদাম কারখানা থেকে লুট করা বাদামগুলো নিয়ে অন্যত্র রাখে আসামিদের লোকজন। পরদিন দুপুর আড়াইটায় আবার ১৩ হাজার কেজি কাঁচা কাজুবাদাম লোপাট করা হয় একই কায়দায়। ৩১ জানুয়ারি ভাটিয়ারি গোড়াউনে ঢুকে আরো ১ লাখ ৩১ হাজার কেজি কাজু বাদাম নিয়ে যায় আসামিদের লোকজন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩৬৫/৩৮৪/৩৮৫/৩৮৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ থাকা তথ্য মতে, কাজু বাদাম কারখানায় উৎপাদন ঠিক রাখতে অতিরিক্ত টাকার প্রয়োজন হলে শহীদুল হক থেকে ব্যবসায়িক স্বার্থে কাঁচা কাজু বাদাম ক্রয়ের জন্য গত বছরের ৯ জুন ২ কোটি টাকা গ্রহণ করেন বাদী। এসময় বাদীর স্বাক্ষর করা ৫টি চেকও নেন শহীদুল হক।
আদালতে জিম্মার আবেদন: কোতোয়ালি থানায় মামলার পরদিন ৯ ফেব্রূয়ারি বাদী আদালতের কাছে তার মালামালের জিম্মা চান। এ নিয়ে বিস্তারিত শুনানি হয়।
আদালতের ত্বরিৎ হস্তক্ষেপ: মহানগর হাকিম আদালতে এ নিয়ে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক তিন কার্যদিবসের মধ্যে লোপাট হওয়া কাজু বাদাম উদ্ধার করে বাদীর জিম্মায় দেয়ার আদেশ দেন। আদেশ পেয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন তৎপর হন। কিন্তু তিনদিনের মধ্যে বাদামগুলো উদ্ধার করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে না পারায় আবার ৭ দিনের সময় চান আদালতের কাছে। আদালত আবারও তিন কার্যদিবসের মধ্যে মালামাল উদ্ধার করে তা বাদীর জিম্মায় দেয়ার আদেশ দেন। এবার কোতোয়ালি থানা পুলিশ বাদামগুলো উদ্ধার করে বাদীর গোড়াউনে স্থানান্তর করে।
পৌনে ২ কোটি টাকার বাদাম: বাদামগুলো উদ্ধারে অভিযান চালান এসআই আইয়ুব উদ্দিন। এ নিয়ে প্রস্তুত করা জব্দ তালিকায় দু’দফায় ১ কোটি ৬৭ লাখ ৪ হাজার ৪০০ টাকার কাজু বাদাম উদ্ধার করার কথা জানান এসআই মোহাম্মদ আইয়ুব উদ্দিন।