গার্মেন্টস পণ্য রফতানি কার্যক্রমের অনুমতি পেলো বিএম কনটেইনার ডিপো

24

পূর্বদেশ অনলাইন
গত ৪ জুন সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের পর ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তারই ফলশ্রুতিতে গার্মেন্টস পণ্য রফতানি কার্যক্রম সম্পাদনের অনুমতি পেয়েছে ডিপো কর্তৃপক্ষ। গত ২৪ অক্টোবর চট্টগ্রাম কাস্টমস তিন মাসের জন্য সাময়িক অনুমোদন দেয়। এজন্য দেওয়া হয়েছে ৯টি শর্ত। শর্তগুলো হচ্ছে- বন্দরের অনাপত্তি পত্র গ্রহণ, ডিপো-সংশ্লিষ্ট সব ধরনের নীতিমালা প্রতিপালন, অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, বিপজ্জনক পণ্য ব্যবস্থাপনার নীতিমালা বাস্তবায়ন, নিজস্ব সফটওয়্যারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সার্বক্ষণিক প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা, আইসিডির বাইরে একাধিক স্থানে ব্যাক-আপ স্টোরেজ স্থাপন ইত্যাদি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষের চিঠিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক নৌ সংস্থা প্রণীত ‘ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ডেঞ্জারাস গুডস বা আইএমডিজি কোড’ প্রতিপালন করার আগে বিপজ্জনক পণ্য ব্যবস্থাপনা করা যাবে না। বিপজ্জনক পণ্য ব্যবস্থাপনার আগে ডিপোতে আলাদা ছাউনি ও চত্বরের ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য যথোপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন থাকতে হবে। বিএম ডিপো সূত্র জানায়, ডিপোর অগ্নিনিরাপত্তায় অত্যাধুনিক ফায়ার সিস্টেম বসানো, নতুন ভবন নির্মাণ, কন্টেইনার উঠানামায় অত্যাধুনিক সরঞ্জাম ক্রয়সহ ডিপোর ভেতরে তৈরি হচ্ছে তিন লাখ গ্যালন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন পানির ট্যাংক। এছাড়াও ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে ‘ফোম ফায়ার সিস্টেম’ তৈরি করা হয়েছে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে মাত্র ১৯ মিনিটে দুই লাখ ৮৬ হাজার স্কয়ার ফিটের পুরো শেড ফোম করা যাবে। নতুন করে এই ডিপোর আধুনিকায়নে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে ডিপো কর্তৃপক্ষ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুমতি পাওয়া চট্টগ্রামের ২০টি কনটেইনার ডিপোর একটি বিএম ডিপো। গত ৪ জুন রাতে দুর্ঘটনার আগে বিএম ডিপোতে মোট আমদানি-রফতানি পণ্যের ৮ শতাংশ কার্যক্রম সম্পাদন করা হতো। দুর্ঘটনায় রফতানি পণ্যবাহী ১৫৪ কনটেইনার ও আমদানি পণ্যবাহী দুটি কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিহত হন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ ৫১ জন। আহত হন দুই শতাধিক ব্যক্তি। তাদের ক্ষতিপূরণও দেয় বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের দুই প্রতিষ্ঠানের ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগে বিএম কনটেইনার ডিপো চালু হয়। চেয়ারম্যান নেদারল্যান্ডসের নাগরিক রবার্ট প্রঙ্ক। ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান এবং পরিচালক স্মার্ট জিন্সের এমডি মুজিবুর রহমান। বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ সব ধরনের কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন চেয়ে দুই দফায় কাস্টমসে আবেদন করে। এরপর কার্যক্রম শুরুর অনুমোদন দেয়া মিলে। এর আগে ২২ আগস্ট খালি কনটেইনার সংরক্ষণ এবং ওঠানো-নামানোর অনুমোদন দেওয়া হয়। বিএম কনটেইনার ডিপোর মহাব্যবস্থাপক নুরুল আকতার বলেন, গার্মেন্টস পণ্য রফতানি কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিয়েছে। বুধবার (২৬ অক্টোবর) থেকে কাজ শুরু হয়েছে। কাস্টমসের সব শর্ত মেনে ডিপোতে সংস্কার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।