গার্মেন্টস কারখানায় আন্তর্জাতিক মূল্যে ডিজেল চায় বিজিএমইএ

12

ঢাকা প্রতিনিধি

রপ্তানিমুখি তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর জন্যে আন্তর্জাতিক মূল্যের সাথে সমন্বয় করে ডিজেলের দাম পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এ দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে চিঠিটি ৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, শতভাগ রপ্তানিমুখি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গ্যাস সরবরাহের বিষয়ে প্রতিনিধিদের সঙ্গে গত ১২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার মূল প্রতিপাদ্য ছিল জ্বালানি সংকট থেকে উত্তরণের উপায় বের করা। দেশের শিল্পাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ নির্বিঘœ করার লক্ষ্যে গত ১১ আগস্ট বাংলাদেশ সরকার একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেই প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন দিনে সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়া হচ্ছে। বিজিএমইএতেও সাপ্তাহিক ছুটি একদিনের স্থলে দুইদিন করা হয়েছে এবং প্রাত্যহিক কর্মঘণ্টা একঘণ্টা কমানো হয়েছে। এতে করে কিছুটা হলেও জ্বালানি সাশ্রয় হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে উৎপাদন কার্যক্রমে জ্বালানির অপরিহার্যতা অত্যধিক। বর্তমানে কারখানাগুলোতে বিদ্যুতের চরম লোডশেডিং চলছে। এ কারণে কারখানার উৎপাদন অব্যাহত রাখতে জেনারেটর ব্যবহার করতে হচ্ছে বিধায় ডিজেলের চাহিদা বাড়ছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালে ডিজেলের মূল্য ছিল প্রতি লিটার ৮০ টাকা, বর্তমানে তা ১০৯ টাকা হয়েছে। বহির্বিশ্বে ডিজেলের মূল্য কমায় আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয়ভাবে ডিজেলের মূল্য পুনর্নির্ধারণ করা হলে তৈরি পোশাক শিল্পসহ সংশ্লিষ্ট সবাই উপকৃত হবে। এই শিল্পটি অনেক বাধা-বিপত্ত মোকাবেলা করে আজ অত্যাধুনিক ও নিরাপদ পোশাক উৎপাদনের সবুজ কেন্দ্র পরিণত হয়েছে।
বর্তমানে বাংলাদেশের মোট রফতানি আয়ের প্রায় ৮২ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। এ খাতে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৪২দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছে। আগামী ২০৩০ সালে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বিজিএমইএ কাজ করে যাচ্ছে। সুতরাং রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ধারাকে অব্যাহত রাখতে এ খাতে আন্তর্জাতিক মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে পুননির্ধারিত মূল্যে ডিজেল সরবরাহ করা আবশ্যক।
এ ব্যাপারে আপনার সরকারের নীতিগত সহায়তা একান্ত প্রয়োজন। এ অবস্থায় নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন অব্যাহত রাখার তথ্যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট মোকাবেলায় রপ্তানিমুখি তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে সমন্বয় করে পুনঃনির্ধারিত মূল্যে ডিজেল সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণের সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।