গরমে নাকাল জনজীবন

65

প্রচন্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। গরমের কারণে রাস্তাঘাটে মানুষও কমে গেছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর ছেড়ে বের হচ্ছেন না। খেটে খাওয়া মানুষের অবস্থা ভয়াবহ। তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আগামী দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৯.৫ এবং চট্টগ্রামে ছিল ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর পর চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার উপর মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় গরম পড়তে শুরু করেছে। তা এখনো অব্যাহত রয়েছে। গত তিনদিনে দেখা যায়, প্রচন্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। সর্বত্র অস্বস্তি বিরাজ করছে। প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। রাস্তায় গণপরিবহনের সংখ্যাও অনেক কমে গেছে।
নগরীর বহদ্দারহাট মোড়, জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ বাদামতল মোড়, বারেক বিল্ডিং মোড়, ষোল শহর দু’নম্বর গেইট’সহ অধিকাংশ মোড়েই গণপরিবহনের আশায় লোকজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এসময় প্রচন্ড গরমে তাদের অতীষ্ঠ হয়ে উঠেতে দেখা যায়।
তবে নগরীর কাঁচা বাজারগুলোতেও তেমন কোন ভিড় দেখা যায়নি। অন্যসময় শত শত লোকজন ভিড় করলেও বর্তমানে তা অনেক কমে গেছে। গরমের কারণেই এ অবস্থা হয়েছে বলে জানান, বক্সিরহাটের মাছ ব্যবসায়ী মো. কামাল উদ্দিন। ঈদের বাজারেও ভিড় অনেকটা কম।সবাই গরম কমার অপেক্ষায় রয়েছেন।নগরীর টেরিবাজারে অল্প সংখ্যক ক্রেতার দেখা মেলে। কিন্তু প্রচন্ড গরমের কারণে ক্রেতাদের মধ্যে দ্রুত কেনাকাটা সেরে বাড়ি ফেরার প্রবনতা দেখা যায়।
গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর আগ্রাবাদ, চকবাজারসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রচন্ড তাপে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষ রীতিমতো হাঁপাচ্ছেন। দরদর করে ঝরছে ঘাম। অনেককে রোদের তাপ থেকে রেহায় পেতে ছাতা ব্যবহার করতে দেখা যায়। কোচিং সেন্টারগুলোতেও শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে গেছে।
দিনমজুর, রিকশাচালকসহ খেটে খাওয়া মানুষদের সড়কের পাশের ভবনগুলোর ছায়ায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। দিনের বিভিন্ন সময় বাসা-বাড়িতে লোডশেডিং হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী ছিলনা।
জানা যায়, নগরীর ঘাটফরহাদবেদ, পাথরঘাটা, ফিরিঙ্গি-বাজার, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, আরামবাগ আবাসিক এলাকা, চকবাজার, গুলবাগ আবাসিক এলাকা সহ অধিকাংশ আবাসিক এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে প্রতিনিয়ত। দিনে ৭ থেকে ১০ বার পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসা যাওয়া করছে এবং এই লোডশেডিং ৫ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হচ্ছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এতে বলা হয়, ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আগামী তিনদিনের মধ্যে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অফিস চট্টগ্রামের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান পূর্বদেশকে জানান, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অতিক্রম করে পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর ফলে আরো দুয়েকদিন তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চট্টগ্রামের তাপমাত্রা ছিল ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।