গম চাষে আশাবাদী রাঙ্গুনিয়ার চাষিরা

46

 

রাঙ্গুনিয়ার কৃষকদের মাঝে গমের চাষের আগ্রহ বেড়েছে। কৃষি জমিতে ধানের পরিবর্তে গম চাষের উজ্জল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। রাঙ্গুনিয়ার নানা ফসলের চাষ কৃত কৃষকরা অতীতে গম চাষ করার সাহস পেত না। গম চাষে আবাহাওয়া অনুকূলে না থাকার কারণে কৃষকরা অন্যান্য ফসলের সাথে গম চাষ করতো একেবারে সিমীত জমিতে। ধান চাষ কিংবা নানা সবজি চাষের মতো গম চাষে তেমন আগ্রহ দেখাতো না। রাঙ্গুনিয়ায় প্রথমবারের মতো এবারে গমের আবাদ হচ্ছে। শীতের প্রকোপ কম থাকার কারণে এবং শীতের স্থায়িত্ব কম থাকায় রবি মৌসুমে দেয়া হয়েছিলো তাপ সহিষ্ণু জাতের গমের বীজ ও সার। উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্ভিদ সংরক্ষন বর্মকর্তা কাজী রমিজ উদ্দিন জানান, প্রনোদনার মাধ্যমে এবার ৬০ জন কৃষককে প্রনোদনা হিসেবে গমের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। শীতের প্রকোপ কম থাকলেও এই জাত দিয়ে আবাদ করা সম্ভব হবে গম চাষ। আমরা কৃষকদের জমিতে গিয়ে নানা পরামর্শ সার্বিক সহযোগিতা দিযে আসছি। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের কাটাথালি গ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, প্রথম থেকে আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এ বছর চাষিরা গমের আবাদে খুশি। ফলন ভালো হবে এটা তাদের দাবি। এ বছর তিনি ৬ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ধান চাষে কৃষক লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না। খরচ বেশি। আশানূরুপ ধানের দাম নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই অনেক কৃষক ধান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তিনি গমের আবাদ থেকে লাভবান হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিবিঘা জমি থেকে ১২ থেকে ১৫ মন গম উঠলে আমরা লাভের মুখ দেখব। রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণ রাজা নগরের কৃষক আবদুল হামিদ জানান, তিনি বাড়িতে খাবার জন্য এ বছর মাত্র এক বিঘা জমিতে গম চাষ করেছেন। গাছ দেখে ও ফলন ভাল হবে বুঝে তিনি খুশি। তিনি বলেন, নিজের এক বিঘা জমিতে গম চাষে সার-বীজ, সেচ, চাষ ও কাটা-মাড়াই করা পর্যন্ত শ্রমিক সব মিলিয়ে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করি ফলন ভালো হলে খরচ উটিয়ে লাভের মূখ দেখতে পাব। উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের ডেইরি ফার্মের মালিক মো. এয়াকুব জানান, গম বিত্রির পাশাপাশি কাঁচা গম গাছ কেটে গো-খাদ্য হিসেবে বিক্রি করে খরচ তুলতে পারবে। এখানে গো-খাদ্যের চাহিদা আছে ব্যাপক। ২৫ থেকে ২৮টি বড় ডেইরি ফার্ম আছে। গম চাষের অনূকুলে আছে জমি। গম চাষে বদলে দিতে পারে শত কৃষকের ভাগ্য। তাছাড়া আমরাও গম চাষ করব বিশেষ করে ডেইরি ফার্মেও মালিকরা। এ ক্ষেত্রে উপজেলা কৃষি অফিসকে সহযোগিতা করতে হবে। রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ধান চাষের বিকল্প হিসেবে গম চাষে ভরে যাবে কৃষি জমি। উপজেলা কৃষি কমৃকর্তা কারিমা আক্তার জানান, বারি গম ৩০ জাতের বীজ দেওয়া হয়েছে। মাঠে গমের আবাদ ভালো দেখা যাচ্ছে। তিনি আশা করছেন গম কাটা-মাড়াই করা পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে এ বছর গম চাষে কৃষকরা লাভবান হবেন। এছাড়া এ বছর কৃষকের আগাম চাষ করা গমে সুফল বয়ে আনবে। আগামীতে আরো ব্যাপক ভাবে গম চাষে আমরা কৃষকদেও উদ্বুদ্ধ করব। এতে রাঙ্গুনিয়ায অন্যান্য ফসলের সাথে গম চাষে ভরে যাবে বিস্তীর্ন জমি।