গবেষণাই পারে পথ দেখাতে : প্রধানমন্ত্রী

16

পূর্বদেশ ডেস্ক

আধুনিক বিশ্বে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি যে বিকাশ ঘটছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গবেষণার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা, যারা আজকে এই যে মেধা অন্বেষণ আমরা করছি, তারা যে নব নব সৃষ্টি করার যে চিন্তা-চেতনা, এই চেতনাই আমাদের আগামি দিনের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কাজেই আমরা বিজ্ঞান শিক্ষা, তার ওপর গবেষণা, স্বাস্থের ওপর গবেষণা, আমাদের বিভিন্ন প্রাণী সম্পদের ওপর গবেষণা, কৃষির ওপর গবেষণা, বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার ওপর আমি সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আসলে গবেষণাই তো পারে আমাদেরকে পথ দেখাতে’।
গতকাল রবিবার সকালে ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ ২০২২’ প্রতিযোগিতায় সেরাদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
নতুন প্রজন্ম আগামিতে দেশকে এগিয়ে নেবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মেধা অন্বেষণ আমি মনে করি একটা চমৎকার ব্যবস্থা। এর মধ্য থেকে অনেক সুপ্ত জ্ঞান বেরিয়ে আসতে পারে, যা আমাদের দেশের আগামী দিনের উন্নয়নে কাজে লাগবে। আমি বলব, আমাদের সোনার ছেলে-মেয়েরা তোমরা তৈরি হও দেশকে আগামি দিনের নেতৃত্ব দিতে। সর্বক্ষেত্রে তোমরা তোমাদের মেধা বিকাশ করবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে যেন বাংলাদেশ আর পিছিয়ে না থাকে। বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়’।
শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, আধুনিকায়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগ ও পরিকল্পনার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের আজকের শিশুরা, তারাই তো ভবিষ্যতে এই ২০৪১ এর কর্ণধার। শুধু ৪১-এ থেমে থাকলে হবে না। ২০৭১ সালে স্বাধীনতার শতবর্ষ আমরা উদ্যাপন করব। আর সেই সাথে ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান আমরা করে দিয়ে গেলাম’।
বাংলাদেশে প্রজন্মের পর প্রজন্মের জন্য ‘সুন্দর জীবন নিশ্চিতে’ ভবিষ্যত পরিকল্পনাগুলো হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। খবর বিডিনিউজের
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আশা করি, আমাদের আজকের শিশুরা ভবিষ্যতে এদেশের কর্তধার হবে। তারাই তো আমার মতো প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে, শিক্ষক হবে, শিক্ষার্থী হবে এবং বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত থেকে দেশের উন্নতি করবে। আমরা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। বিজয়ী জাতি। আজকের শিশুদের বলব, নতুন প্রজন্মকে বলব, আমাদের মাথায় এটা সবসময় রাখতে হবে, আমরা বিজয়ী জাতি। বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলব। সম্মানের সাথে চলব। আর এই দেশ আমাদের দেশ। এই দেশকে আমরা গড়ে তুলব উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে’।
বাংলাদেশ এখন অনেক উন্নত মন্তব্য করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘প্রত্যেক ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। গৃহহীন, ভূমিহীনদের আমরা ভ‚মি দিচ্ছি বিনা পয়সায়, ঘর করে দিচ্ছি। আমরা শিক্ষার সুযোগটা একেবারে তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছি। স্বাস্থ্য সেবা তৃণমূল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছি। আমাদের বিজ্ঞান চর্চা এবং এর মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান। এর মাধ্যমেই আমরা দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব’।
অনুষ্ঠানে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের সম্পৃক্ত করে তাদের পুরস্কার দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরাও কোনো না কোনো ক্ষেত্রে মেধার পরিচয় দিতে পারেন। কাজেই তাদেরকেও আমাদের সাথে এক সাথে নিয়ে আসতে হবে এবং তারা আমাদেরই সন্তান,আমাদেরই আপনজন। কাজেই সেই কথাটা সকলকে মনে রাখতে হবে। এই যে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন, তারা এই সমাজেরই একটা অংশ, সেই হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে এবং তাদের পাশে থেকে তাদের সহযোগিতাও করতে হবে’।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে নতুন প্রজন্মকে আমি সেটাই বলব যে, সকলকে নিয়ে চলা। তবেই না আমরা সাফল্য অর্জন করতে পারব। কাজেই সেটাই আমি চাই’।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে মর্যাদা পেয়েছে উল্লেখ করে দেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রী দীপু মনি, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী যুক্ত ছিলেন।