গণপরিবহন হিসেবে মেট্রোরেল সময়ের দাবি

50

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) মেগাপ্রকল্প এলিভেট এক্সপ্রেসওয়ে ও চসিক এমআরটি সম্পর্কিত এক সমন্বয় সভা গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এতে সভাপতিত্ব করেন।
সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামশুদ্দোহা, সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, সিডিএ’র এক্সপ্রেসওয়ের ডিজাইনার নূর সাদেক প্রমুখ মতামত দেন। এই সময় চসিক তত্ত্বাবধায়ক, নির্বাহী প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম বন্দর, রেলওয়ে, ওয়াসা, সড়ক জনপথসহ নগরীর সেবাসংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে সিটি মেয়র বলেন, আমরা অপরিকল্পিত নগরায়ন চাই না। প্রতিনিয়ত এই অপরিকল্পিত নগরায়নের মাশুল দিতে হচ্ছে চসিককে। তাই নগরবাসীর স্বার্থে পরিকল্পিত ও টেকসই উন্নয়ন চাই। বর্তমানে এই নগরীতে যে বসতি তা কখনো কাম্য নয়। ইতোপূর্বে এই আয়তন বর্ধিত করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিভিন্ন আইনী জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। সেই মামলাটি এখনো বিদ্যামান রয়েছে। নগরের আয়তন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে না বাড়ায় বর্তমানে গণপরিবহনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই ঘন অধ্যুাষিত এ নগরের জন্য গণপরিবহন হিসেবে মেট্রোরেলের বিকল্প নেই বলে তিনি মন্তব্য করেন। মেট্রেরেল এখন সময়ের দাবি। বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নগরীর জন্য আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এই প্ল্যানটি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এই মাস্টারপ্ল্যানে মেট্রোরেলে প্রভিশন রাখা হবে সংশ্লিষ্টরা চসিককে জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, নগরীর বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে গণপরিবহন হিসেবে মেট্রোরেলে অপরিহার্যতার কথাও সিডিএ কর্তৃপক্ষ নীতিগতভাবে মেনে নিয়েছে। তারাও তাদের প্রণীত নতুন মাস্টারপ্ল্যানে এমআরটি করিডোর রাখবে।
সিটি মেয়র বলেন, মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, আনোয়ারায় দেশি-বিদেশি ইকোনমিক জোন চালু হচ্ছে। এগুলো পুরোদমে উৎপাদনে গেলে নগরে ১৫ লাখ মানুষ আরো যুক্ত হবে। তাই গণপরিবহনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এটা বিবেচনায় নিয়ে চসিক এমআরটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। গণপরিবহনের সমস্যা সমাধানের জন্য এমআরটি বা মেট্রোরেলের বিকল্প নেই। সরকার এই ব্যাপারে আন্তরিক। এমআরটি রাখতে হবেই। এমনকি সিডিএ’র নতুন মাস্টারপ্ল্যানে এমআরটির জায়গা চিহ্নিত করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, এই মুহূর্তে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে বাধা নেই। মেয়র দুই সংস্থার প্রকৌশলীদের উদ্দেশে বলেন, নগরের যেকোনো প্রকল্প পরিকল্পিত ও টেকসই করতে হবে। যাদের জন্য এই উন্নয়নকাজ তাদের সুফল নিশ্চিত করতে হবে।
সিডিএ’র প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান জানান, টাইগারপাস থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত চার লেনের এক্সপ্রেসওয়ে হচ্ছে। টাইগারপাসে চসিকের বিন্যাঘাস প্রকল্পের পাশে বাঘের স্থাপনার আগে ল্যান্ডিং থাকবে। এক্সপ্রেসওয়েতে উঠবে টাইগারপাস দিয়ে। মাঝখানে দুইমিটার গ্যাপ থাকবে। দেওয়ানহাট ওভারপাসের ওপর দিয়ে যাবে এক্সপ্রেসওয়ে। এরপর চার লেনের এক্সপ্রেসওয়েতে মিলিত হবে। তিনি জানান, বারিক বিল্ডিং থেকে সল্টগোলা পর্যন্ত মূল সড়কের ওপর এক্সপ্রেসওয়ে হবে না। সড়কের উত্তরপাশে ৩০ ফুট জায়গা নেওয়া হবে। ফায়ার সার্ভিস, বন্দর জায়গা ছাড়তে সম্মত হয়েছে বলে তিনি সভায় জানান। এমনকি এক্সপ্রেসওয়ের জন্য ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ করা হবে। প্রকল্প পরিচালক আরো জানান যে , কমার্স কলেজ দিয়ে রেম্প উঠবে। জাতিতাত্তি¡ক জাদুঘরের সামনে এক্সপ্রেসওয়ের যানবাহন নামবে। নিমতলায় রেম্প নামবে। বারিক বিল্ডিংয়ে রেম্প থাকবে না। ১২-২৫ মিটার উঁচু হবে এক্সপ্রেসওয়ে। সল্টগোলা ব্রিজের ওপর দিয়ে যাবে এক্সপ্রেসওয়ে। পোর্ট, রেলওয়েসহ সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে এক্সপ্রেসওয়েটি করা হচ্ছে বলে তিনি সিটি মেয়রকে অবহিত করেন। এছাড়াও সিমেন্ট ক্রসিং থেকে খেজুরতলায় আড়াইশ মিটার ড্রেন নেই। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ড্রেন নির্মাণ করা হবে। তিনি চসিকের উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। খবর বিজ্ঞপ্তির