খোলেনি নগরীর কোনো মার্কেট

56

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী সমিতিগুলোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগরের বড় বড় সব শপিং সেন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ছোট ছোট কিছু দোকান খোলা দেখা গেছে।
গতকাল রবিবার নগরীর বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এ চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আড়ংয়ের শো রুম খোলা রাখতে দেখা গেছে। আর এ নিয়ে মার্কেট মালিক সমিতির মাঝে ক্ষোভ দেখা গেছে।
জানা গেছে, টেরিবাজার, তামাকুমন্ডি লেইন তথা রিয়াজউদ্দিন বাজারের ১১০টি মার্কেট, মিমি সুপার মার্কেট, স্যানমার ওশান সিটি, চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্স, ফিনলে স্কয়ার, সেন্ট্রাল প্লাজা, আমিন সেন্টার, আফমী প্লাজা, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেট, কল্লোল সুপার মার্কেট, লাকী প্লাজা, শাহ আমানত সিটি করপোরেশন সুপার মার্কেটসহ প্রধান প্রধান শপিং সেন্টারগুলো বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এসব শপিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।
আগ্রাবাদ সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দিন জানান, করোনা ভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ। অনেক সময় এ রোগের লক্ষণ দেখা না দিয়ে সরাসরি আক্রমণ করে। এ ধরনের রোগী কিংবা কোনো করোনা রোগী যদি পরিচয় গোপন করে দোকানে কেনাকাটা করতে আসে, যেসব পণ্যসামগ্রী তিনি ধরবেন সেখানে করোনা ভাইরাসের জীবাণু ছড়াবে। এমনটি হলে সেই জীবাণু আমাদের পরিবারে, কর্মচারী ও গ্রাহকদের মধ্যে ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।
মিমি সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, গত ৮ মে আমরা বেশ কয়েকটি মার্কেটের মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দের বৈঠকে ‘জীবন বাঁচলে জীবিকা’ এ স্লোগানে বড় বড় শপিং সেন্টারগুলো বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছি। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দও আমাদের কথায় একমত হন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আগে বাঁচতে হবে, তারপর জীবিকা নিয়ে চিন্তা করব। আমরা দেখছি আড়ংসহ কিছু শো রুম তারা খোলা রেখেছে। যেটি মোটেও উচিত হয়নি। করোনা রোগীর সংক্রমণ অনেক সময় দেখা যায় না। আমরা যদি কোটি কোটি টাকা ছাড় দিতে পারি, তাহলে তারা কেন ছাড় দিবে না? যেসব দোকান খোলা রাখা হয়েছে, আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আড়ং এর কাস্টমার নির্বাহীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অনলাইনে নিবন্ধন করেই নির্দিষ্ট সময়ে ক্রেতাদের আউটলেটে কেনাকাটার সুযোগ দিচ্ছে আড়ং। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকছে ঈদের কেনাকাটার জন্য। সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্য সুরক্ষা পদ্ধতি মেনেই গ্রাহকদের ঢোকানো হচ্ছে। তবে বন্ধের ব্যাপারে কোন নির্দেশনা আমরা এখনো পাইনি।
টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মো. বেলায়েত হোসেন পূর্বদেশকে বলেন, পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে আমরা জানিয়েছি টেরিবাজার ঈদের আগে খুলছে না। আমাদের ৮২টি মার্কেটের ২ হাজারের বেশি দোকান খোলেনি রবিবার। শুধু যাকাতের কাপড়ের কিছু অগ্রিম অর্ডার ছিলো সেগুলো হোম ডেলিভারি দিয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
জহুর হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল আমিন বলেন, আমাদের এক হাজারের অধিক দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। ঈদের আগে এসব দোকান খুলছে না। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমরা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তামাকুমন্ডি লেইন বণিক সমিতির সভাপতি মো. শামসুল আলম জানান, সকাল থেকে সমিতির স্বেচ্ছাসেবক ও সিকিউরিটি গার্ডরা বাঁশ দিয়ে লকডাউন করে রেখেছে পুরো এলাকা। ১১০টি মার্কেটের ১৩ হাজার দোকানই বন্ধ। এখানে ৫০ হাজার দোকান মালিক ও কর্মচারী করোনা প্রতিরোধে ঈদের আগে দোকান না খোলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আশাকরি আমাদের সিদ্ধান্ত অব্যাহত থাকবে।
ফুটপাতে হকার বসার প্রসঙ্গ নিয়ে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসীন পূর্বদেশকে বলেন, কিছু হকার মাঝে মাঝে ফুটপাতে বসছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে তুলে দিয়েছি। তবে বৃহৎ আকারে হকার বসছে না।