খাশুগজি হত্যাকান্ডের আন্তর্জাতিক তদন্তের পরিকল্পনায় তুরস্ক

30

ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশুগজিকে হত্যার ঘটনায় তুরস্ক আন্তর্জাতিক তদন্তের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু। সামনের দিনগুলোতে আঙ্কারা এ বিষয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আনাদোলু সোমবার মেভলুতকে উদ্ধৃত করে এসব জানিয়েছে বলে খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের। এক সময় সৌদি রাজপরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত জামাল খাশুগজি পরবর্তীতে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সমালোচক হয়ে উঠেছিলেন। বিয়ের কাগজপত্র জোগাড়ে গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনসুলেটে গিয়ে বর্বর হত্যাকান্ডের শিকান হন স্বেচ্ছা নির্বাসনে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর থেকে ওয়াশিংটন পোস্টে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে নিয়মিত কলাম লেখা এ সাংবাদিক।
কনসুলেটের ভেতর খাশুগজির পরিণতি নিয়ে প্রথম থেকেই লুকোচুরির আশ্রয় নেয় রিয়াদ। একেক বার একেক ধরনের বিবৃতি দেয়ার পর শেষদিকে তারা জানায়, মধ্যস্থতার মাধ্যমে সৌদি আরবে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর কনসুলেটের ভেতরই খাশুগজিকে খুন ও তার মৃতদেহ গুম করে ফেলা হয়। তুরস্ক পরে এ হত্যাকান্ড নিয়ে বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে যৌথ তদন্তের কথা জানায়। ঘটনা উন্মোচনে সৌদি আরব সহযোগিতা করছে না বলেও অভিযোগ করে তারা। পশ্চিমা দেশগুলো খাশুগজি হত্যাকান্ডের বিষয়টি চেপে যাচ্ছে বলেও সোমবার এক বক্তৃতায় অভিযোগ করেন তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মেভলুত। তিনি জানান, আঙ্কারা খাশুগজি হত্যাকান্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
“কিছু পশ্চিমা দেশ আছে যারা এটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কারণটা জানি। আমরা জানি ও দেখেছি, কী কী সব চুক্তি হয়েছে। দেখেছি, যারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে বলে তারা কীভাবে টাকা দেখতে পেয়ে এটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। “এরপরও আমরা এর শেষ পর্যন্ত যাবো। সামনের দিনগুলোতে এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা, শিগগিরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে,” মেভলুত এমনটাই বলেছেন বলে খবর আনাদোলুর।

রয়টার্স বলছে, সৌদি আরবের সঙ্গে যৌথ তদন্তে তুরস্ক ইস্তাম্বুলের কনসুলেট, কনসালের বাসভবনসহ বেশ কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চালালেও খাশুগজির মৃতদেহের সন্ধান পায়নি। কনসুলেটের ভেতর ওয়াশিংটন পোস্টের কলামলেখক খাশুগজি হত্যাকান্ডের ঘটনায় সৌদি আরবের ওপর পশ্চিমা বিভিন্ন মিত্রদেশের চাপ বেড়েছে; ক্ষুন্ন হয়েছে ৩৩ বছর বয়সী ক্রাউন প্রিন্সের ভাবমূর্তিও।
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের এক ভোটে সাংবাদিক খুনে মোহাম্মদকেই দায় দেওয়া হয়েছে। সৌদি রাজপরিবারের শীর্ষ পর্যায় থেকে খাশুগজিকে খুন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগও করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। রিয়াদ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, সাংবাদিক খুনের সঙ্গে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদের কোনো ধরনের যোগসাজশ নেই। এদিকে খাশুগজি খুনে জড়িতসন্দেহে সৌদি আরব ১১জনকে আটক করেছে। দেশটির কৌঁসুলিরা এর মধ্যে ৫জনের মৃত্যু্দন্ড চেয়েছেন।