খাবার নিয়ে দেশে হাহাকার নাই : কৃষিমন্ত্রী

12

পূর্বদেশ অনলাইন
উন্নত জাতের উদ্ভাবনে দেশে উৎপাদন বেড়েছে এবং পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুত আছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, দেশে খাদ্যশস্যের যথেষ্ঠ মজুত রয়েছে এবং কোনও হাহাকার নেই। তবু সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী এবং বিএনপির ফখরুল ইসলাম আলমগীর টেলিভিশনের সামনে এসে প্রচার করেন বাংলাদেশ ডুবে গেল, বাংলাদেশের মানুষ না খেয়ে মরলো। যেন বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা চলছে, এমন মিথ্যা প্রচারণা করছেন তারা। নতুন জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ লাখ নতুন শিশু এদেশে জন্ম নেয়। এদের খাদ্য নিরাপত্তায় নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন করতে হবে। কম জমিতে বেশি উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) ঘিওর উপজেলার বানিয়াজুরিতে নতুন জাতের ধান ব্রি-৯২ এর প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন শেষে এক মতবিনিময় সভায় কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২০০৩-০৬ সালে খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া ক্ষমতায় ছিল। এ সময় প্রতি বছর শত-শত মানুষ কার্তিক মাসে মঙ্গার কারণে না খেয়ে মারা গেছে। তবে গত ১৩ বছরে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে একজন মানুষ না খেয়ে মারা গেছে, এই তথ্য যদি কোনও সাংবাদিক দেখাতে পারেন আমি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবো। ব্রি-৯২ জাতের ধানের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৯২ জাতের ধান সবচেয়ে বেশি উৎপাদনশীল বলে প্রমাণ হয়েছে। এই জাত থেকে প্রতি শতকে কমপক্ষে এক মণ ধান পাওয়া যাবে। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত গবেষণার মাধ্যমে নতুন-নতুন জাত উদ্ভাবন করছে। আমরা এর সুফল পেতে শুরু করেছি। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ৭১-এর যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে দেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষ। জমি ছিল মাথাপিছু ২৮ শতাংশ। এখন সতের কোটি মানুষ, জমি মাথাপিছু ১০ শতাংশ। আগে খাদ্যাভাব ছিল, খাদ্য ঘাটতি ছিল। খাদ্যের জন্য সারা পৃথিবীতে আমরা ঝুড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াতাম। অন্য দেশের সাহায্য-সহযোগিতা ছাড়া মানুষকে খাওয়ানো কঠিন হয়ে যেতো। তখন দেশে দুর্ভিক্ষ হতো। প্রতি বছর আশ্বিন-কার্তিক মাসে মঙ্গা হতো। কোনও মানুষের ঘরে খাবার থাকতো না। সেই বাংলাদেশে আজ কোনও মানুষ দুই বেলার কম খায় না। সবাই দুই বেলার বেশি খায়। কোনও কোনও বছর খাদ্য উদ্বৃত্ত হচ্ছে। আমরা বর্হিবিশ্বে তা রফতানি করছি। আমাদের এই সাফল্য এবং অর্জন সফল হয়েছে সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বের ফলে। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ, ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান, বানিয়াজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসআর আনসারী বিল্টু প্রমুখ। এর আগে, তিনি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার কাশিমনগর এলাকায় নতুন জাতের ধান ব্রি-৯২ এর প্রদর্শনী প্লট পরিদর্শন করেন।