খাগড়াছড়িতে যক্ষা নিরোধ সমিতির সভা

58

যক্ষা মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে খাগড়াছড়িতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে যক্ষা বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার উদ্যোগে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় যক্ষা নিরোধ সমিতি (নাটাব) খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক জীতেন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার নুপুর কান্তি দাশ। যক্ষা রোগ কিভাবে কেন হয় এমন নিরাময় বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মিটুন চাকমা। সভায় উপস্থিত ছিলেন চৌধুরী আতাউর রহমান রানা, আবু তাহের মোহাম্মদ, নুরুল আজম প্রমুখ। এতে জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা অংশ নেন। প্রধান আলোচক সিভিল সার্জন ডাক্তার নুপুর কান্তি দাশ বলেন, যক্ষা ছোঁয়াচে হলেও সচেতনতার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে সাংবাদিক সমাজের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি আরো বলেন, সাধারণত বদ্ধ, স্যাঁতস্যাঁতে, ঘনবসতিপূর্ণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝেই যক্ষা বা টিবি রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। যক্ষা বা টিবির জীবাণুর সংক্রামণ বৈশিষ্ট্যের কারণেই এমনটি হয়। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতার মাত্রা কম থাকায় এ রোগের বিভিন্ন লক্ষণ বা উপসর্গ ধাপকে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীর সিংহভাগেরই তেমন ভালো কোনো ধারণা নেই। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবার কিউলোসিস নামের এক ধরনের জীবাণু থেকে এ রোগ ছড়ায়। আক্রান্ত রোগীর কফ থেকে এ রোগের জীবাণু একজনের দেহ থেকে অন্যজনের শরীরে প্রবেশ করে। এ রোগের কোন নির্দিষ্ট সুপ্ত কাল নেই। যেসব রোগী ৩ সপ্তাহের বেশি জ্বরে ভোগে তাদের ৩৩ শতাংশ যক্ষায় আক্রান্ত হওয়ায় সম্ভাবনা থাকে। যাদের কাছ থেকে যক্ষা রোগ ছড়াতে পারে তাদের বলা হয় ওপেন কেস। এদের কফ থেকে সব সময় জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। তাই এদের সাথে চলাফেরা করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। রোগীর হাঁচি কাশির সাথে সাধারণত রোগ জীবাণু বাইরে আসে। রোগীর অন্য কোনো জিনিস যেমন থালা বাটি গ্লাস পরিধেয় বস্ত্রাদির মধ্যে দিয়ে এ রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। বুকের এক্স-রে রক্তের ইএসআর, কফ পরীক্ষা এবং টিউবার কিউলিন বা মনটেংটেস্ট করে যক্ষা রোগী শনাক্ত করা হয়। বিসিজি ভ্যাকসিন ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে যক্ষা প্রতিরোধ করতে পারে। রোগের লক্ষণ ও এর চিকিৎসা সম্পর্কে সংবাদকর্মীরা সমাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। যদি সাধারণ মানুষের মাঝে যক্ষারোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে সাংবাদিক সমাজের নেতৃবৃন্দরা কথা বললে মানুষ তা সহজেই গ্রহণ করতে পারে এবং বিশ্বাস করে।