ক্লাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটালেন ইউপি চেয়ারম্যান!

13

পূর্বদেশ ডেস্ক

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটালেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। গোমতি বিরেন্দ্র কিশোর (বিকে) উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির পাঠদানের সময় এ ঘটনা ঘটে।
গত সোমবার এ ঘটনার বিষয়টি পরে জানাজানি হয়।
ওই ইউপি চেয়ারম্যান বলছেন, অন্য কোনো উদ্দেশ্য থেকে নয়; তিনি তাৎক্ষণিকভাবে মেজাজ হারিয়ে এ কাজ করেছেন।
বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক শারমিন আক্তার বলেন, ‘সকালে আমি সপ্তম শ্রেণির পাঠদান করাচ্ছিলাম। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শ্রেণিকক্ষের পেছনের দরজা দিয়ে প্রবেশ করেন। চেয়ারম্যান বাচ্চাদের পাঠ্য বই থেকে বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাস করেন এবং পাঠ্যবই রিডিং পড়তে বলেন। বই থেকে বিভিন্ন শব্দার্থ জিজ্ঞাস করেন। বাচ্চারা ভয়ে রিডিং পড়তে পারে নাই। এতে চেয়ারম্যান রেগে যান। এ সময় তিনি আমাকে বেত নিয়ে আসতে বললে বিদ্যালয়ের বেতের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আছে বলে জানাই। বিদ্যালয়ে বেত না থাকায় আমাকে বাঁশের কনচি আনতে বাধ্য করেন। পরে তিনি তা দিয়ে শিক্ষার্থীদের পেটান’।
বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাহিদা আক্তার বৃষ্টি, আয়েশা আক্তার জেরি, ঝরণা ত্রিপুরা, ফাহাদুল ইসলাম সিয়াম শ্রেণিকক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান তাদের বেত দিয়ে মেরেছেন বলে জানায়।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দিনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত। চেয়ারম্যান বাচ্চাদের বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞাস করেন। শিক্ষার্থীরা উত্তর দিতে না পারায় তাদের বেত্রাঘাত করেছেন’।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হুদা বলেন, ‘ওইদিন আমি দাপ্তরিক কাজে মাটিরাঙা উপজেলা সদরে ছিলাম। বিদ্যালয়ে এসে ঘটনাটি জানতে পারি। প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে আমার অনুমতি না নিয়ে বাইরের কেউ ক্লাসে প্রবেশ করতে পারেন না। ক্লাসে ঢুকে শিক্ষার্থীদের পেটানোর কোনো বিধান নেই; বিদ্যালয়ে আমরা বেতও রাখি না’।
শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত প্রসঙ্গে ইউপি চেয়ারম্যান মো. তফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি মেজাজ হারিয়ে এ কাজটি করেছি। তাদের (শিক্ষার্থী) পাঠ্য বইয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জানতেই চেয়েছি। এ সময় শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে কোনো কথাই বলেনি। এতে মেজাজ হারিয়ে ম্যাডামকে বেত আনতে বলেছি। সামনের বেঞ্চের শিক্ষার্থীদের চিকন একটা বাঁশের কনচি দিয়ে মেরেছি। আমার অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না’। খবর বিডিনিউজের
এ ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ না দিলেও স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মাটিরাঙা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী।