ক্রেতাশূন্য কাঁচাবাজার

65

করোনার প্রভাবে সবকিছু বন্ধ রাখার ফলে ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে কাঁচাবাজার। অন্যদিকে দাম কমেছে সবজির। কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে প্রায় সবজির দাম। বাজারে ক্রেতা না থাকায় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, এভাবে ক্রেতাশূন্য অবস্থায় ব্যবসা সম্ভব নয়, কাল থেকে আমরাও যার যার এলাকায় চলে যাব। কারণ সারাদিন দোকানে বসে থেকে যদি বিক্রি না হয় পুষিয়ে উঠতে পারব না।
জানা যায়, গত ২৬ তারিখ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে সবকিছু। এমনকি প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে সবাইকে বাসার ভেতরে অবস্থান করার জন্য। তাই অতীব জরুরি ছাড়া কেউ বেরুচ্ছে না বাসা থেকে।
গতকাল শুক্রবার নগরীর কাজীর দেউড়ি ও চৌমহনী কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
সবজির বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ২০ টাকা কমেছে। মাছ বাজারে কয়েকটি সামুদ্রিক মাছ দেখা গেলেও পুকুর ও নদীর মাছ ছিলই না। আবার দেখা মেলেনি মাংস বিক্রেতাকেও।
জানা যায়, গাজর ৫ টাকা কমে ৩৫ টাকায়, শসা ৫০ টাকা কমে ৫০ টাকায়, ফুলকপি ৫ টাকা কমে ৩৫ টাকায়, বাঁধাকপি ৫ টাকা কমে ৩০ টাকায়, বরবটি ৫ টাকা কমে ৮৫ টাকায়, মূলা ১০ টাকা কমে ৩০ টাকায়, বেগুন ১০ টাকা কমে ৩৫ টাকায়, কাঁচা মিষ্টি কুমড়া ৫ টাকা কমে ৪০ টাকায়, পাকা মিষ্টি কুমড়া ৫ টাকা কমে ২৫ টাকায়, টমেটো ৫ টাকা কমে ৩০ টাকায়, লাউ ৫ টাকা কমে ৩০ টাকায়, ২০ টাকা কমে ৮০ টাকায়, শিমের বিচি ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায়, পেঁপে ১০ টাকা কমে ৪০ টাকায়, মরিচ ৬০ টাকায় (অপরিবর্তিত), ঢেঁড়শ ৮০ টাকায় (অপরিবর্তিত), ওলকপি ৫ টাকা কমে ৩৫ টাকায়, শালগম ৩৫ টাকায় (অপরিবর্তিত), কচুর লতি ৫ টাকা কমে ৬০ টাকায়, খিরা ৫ টাকা কমে ৩০ টাকা, ধুন্দল ৫ টাকা কমে ৬০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৫০ টাকায় (অপরিবর্তিত), ঝিঙ্গা ৩০ টাকা কমে ৮০ টাকায়, কচুছড়া ১৫ টাকা কমে ৮০ টাকায়, পটল কেজি ৫০ টাকা কমে ৭০ টাকায় এবং নতুন কাকরোল ১২০ টাকা কমে ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে।
বিক্রেতা মো. ইরফান জানান, বাজারে সবকিছুর দাম কম। আর কোন ক্রেতা আসছে না।
বাজারে পুকুরের মাছ না থাকলেও কয়েক দোকানির কাছে কিছু সামুদ্রিক মাছ দেখা গেছে। সেখানে বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায়, পোয়া মাছ কেজি ৩০০ টাকায়, রূপচান্দা ৮০০ টাকায়, সাদা রূপচান্দা ৯০০ টাকায়, বড় চিংড়ি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় এবং কোরাল মাছ ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।
মাছ ব্যবসায়ী শওকত হোসেন বলেন, দুপুরের দিকে বাজারে কয়েক কেজি মাছ বিক্রি হলেও সন্ধ্যার দিকে কোন বিক্রিই হয়নি। অন্যদিকে বাজারে দেখা যায়নি মাংস বিক্রেতাকে।
তবে ব্রয়লার মুরগি কেজি ২০ টাকা কমে ১২০ টাকায়, দেশি মুরগি ১০০ টাকা কমে ৪০০ টাকায় আর সোনালী মুরগি ৩০ টাকা কমে ২৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
মুরগি ব্যবসায়ী মো. ইকবাল বলেন, বাজারে কোন ক্রেতা না থাকায় অবস্থা খুব খারাপ যাচ্ছে। দুপুরে কোন খাবার হোটেল খোলা না থাকায় খাওয়ার সুযোগ হয়নি। তাই বেচা বিক্রি না হলে কালকে থেকে দোকান খুলবো না চিন্তা করেছি। করোনা আক্রান্তের ভয় নিয়ে দোকান কে করবে।
ডিম ব্যবসায়ী আবুল হোসেন বলেন, লেয়ার মুরগির ডিম ডজন প্রতি ২০ টাকা কমে ৮৪ টাকায়, দেশি মুরগির ডিম ১৬০ টাকায় (অপরিবর্তিত) এবং হাঁসের ডিম ডজনে ১৫ টাকা কমে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া পূর্বদেশকে বলেন, করোনা আতঙ্কে সকলে ঘর থেকে বের না হওয়াতে দাম একটু কমতি রয়েছে।