ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মাত্র ২২৮ জন

17

ঢাকা প্রতিনিধি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে ক্যান্সার চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন মাত্র ২২৮ জন। জনসংখ্যার তুলনায় যা অপ্রতুল। বাংলাদেশ সোসাইটি অব রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট (বিএসআরও) এর মতে ৫ হাজার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দরকার। শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার বিষয়ের ফ্যাকাল্টি মেম্বার যদি আমাকে সহযোগিতা করেন তবে আমার ক্যাম্পাসেই আগামী সেশনে আসন সংখ্যা ১০ থেকে ১৫ জনে উন্নীত করব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল স্বাস্থ্যসেবার মত ক্যান্সার সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিভাগীয় শহরে ক্যান্সার ইন্সটিটিউট করার সিদ্ধান্তের ফলে আমরা আশান্বিত হয়েছি। এখানেও অনেক ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন হবে। গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ প্রবীণ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বাংলাদেশ সোসাইটি অব রেডিয়েশন অনকোলজিস্টস (বিএসআরও)। অনুষ্ঠানে ক্যান্সার চিকিৎসায় অসামান্য অবদান রাখার জন্য ৬ জনকে মরণোত্তর ও ৮ জন ক্যান্সার বিশেষজ্ঞকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ানস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ ক্যান্সার বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির জন্য ছাত্র ভর্তি ও পড়ানো হয় এমন সব প্রতিষ্ঠানে ক্যান্সার বিষয়ের নামকরণের ভিন্নতা থাকায় চিকিৎসক নিয়োগে জটিলতার কথা বলা হয়। ক্যান্সার বিষয়ের নামের জটিলতা সমাধানের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সব প্রতিষ্ঠানের ডিগ্রি সমান হিসেবে বলা হয়। বিএসএমএমইউ উপাচার্য ও বিসিপিএসের সভাপতি নামের জটিলতা কাটানোর জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব রেডিয়েশন অনকোলজিস্টসের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া। বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীর সময় যুক্তরাষ্ট্রের ৩২ কোটি লোকের মধ্যে ১২ লাখ মানুষ মারা যায়। সে হিসেবে বাংলাদেশের ৬ লাখ মানুষ মারা যাবার কথা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর মনিটোরিং, দিক নির্দেশনা এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশে মাত্র ৩০ হাজার মানুষ মারা গেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের প্রয়োজনে প্রতিটি জেলায় আইসিইউ সেবা নিশ্চিত করতে বয়সের বাধা তুলে দিয়ে স্বল্পতম সময়ে এনেসথিওলজিস্ট নিয়োগ দিয়েছেন।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগ স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টি অনলাইনে দেয়া চালু করেছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট অনলাইনে চালু করা প্রয়োজন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ানসের (বিসিপিএস) সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ বলেন, এক সময় বাংলাদেশের হৃদরোগের রোগীরা বিদেশে যেতো। বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়া রোগীদের তালিকায় প্রথম ছিল হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা। দেশের হৃদরোগের চিকিৎসায় অনেক উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে বিদেশ যাবার রোগীর তালিকায় হৃদরোগে আক্রান্তের সংখ্যা তৃতীয়। তবে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত রোগীরা এ তালিকায় প্রথম। তাই এ বিষয়ে চিকিৎসক বাড়ানো সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, ক্যান্সারসহ সকল চিকিৎসাই সময় নিয়ে পরিকল্পনা মাফিক করা উচিত। অনুষ্ঠানে সোসাইটির বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম ও আন্তর্জাতিক অর্জন সম্পর্কে প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ডা. সাদিয়া শারমিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসআরও এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. কাজী মুশতাক হোসেন। অনুষ্ঠানে বিএসআরও’র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম. নিজামুল হক, অধ্যাপক ডা. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ্, সদস্য অধ্যাপক সারোয়ার আলম, অধ্যাপক ডা. আব্দুল বারী, প্রকাশনা সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক ডা. মামুন উর রশিদ প্রমুখ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অংশগ্রহণ করেন।
আইআইইউসি’র ২৫ বছর পূর্তি উৎসব
ষ শেষ পৃষ্ঠার পর
আইআইইউসির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী দীন মুহাম্মদ, আইআইইউসির উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মাসরুরুল মওলা, কন্ট্রোলার অব এক্সাম প্রফেসর ড. গিয়াস উদ্দিন হাফিজ, প্রফেসর ড. নাজমুল হক নদভীসহ অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।
বিমানবন্দরে প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল মুসলিহকে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা জানানো হয়। বহুদিন পর আইআইইউসির অভিভাবককে কাছে পেয়ে সবাই আনন্দ প্রকাশ করেন।
আইআইইউসি’র ২৫ বছর পূর্তি উৎসব আয়োজন সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান, প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি জানান, আইআইইউইসির ইতিহাসে অন্যতম সেরা আয়োজন হতে যাচ্ছে ২৫ বছর পূর্তি উৎসব। আইআইইউসিতে বহু বছর যাবত এই ধরনের প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়নি। আলহামদুলিল্লাহ, এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বহু মন্ত্রী, সচিব, শিক্ষবিদ ও সমাজ সেবকরা ইতিমধ্যে বাংলাদেশে পদার্পণ করেছেন। আপনারা জেনেছেন যে, আন্তর্জাতিক ইসলামিক ব্যাক্তিত্ব প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজ আল মুসলিহ, আন্তর্জাতিক ইসলামিক স্কলার ড. আকরাম নদভী, কিং আব্দুল আজিজ ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েট স্টাডিজের ডিন প্রফেসর ড. সউদ আল সুলামিসহ অন্যান্য মেহমানবৃন্দ ইতিমধ্যে বাংলাদেশে এসেছেন। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে পুরো আইআইইউসি ক্যাম্পাসকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। উক্ত অনুষ্ঠানে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ভিআইপি ব্যক্তিত্বগণকে দাওয়াত প্রদান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, বিভিন্ন বিভাগের অ্যালামনিসহ প্রায় ১৫ শত মেহমান ২৯ অক্টোবর আইআইইউসির ২৫ বছর পূর্তি উৎসবে যোগ দিচ্ছেন।
২৫ বছর পূর্তি উৎসব আয়োজন কমিটির আহবায়ক ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী দীন মুহাম্মদ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, ২৫ বছর পূর্তি উৎসব ও বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ১১তম সাধারণ সভা আয়োজনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
২৯ অক্টোবর শনিবার বিশ^বিদ্যালয়ের অডিটরিয়মে ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান হবে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। সন্ধ্যার পর হোটেল রেডিসন বøু তে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ১১তম সাধারণ সভার প্রথম অধিবেশন এবং ৩০ অক্টোবর রবিবার গলফ ক্লাবে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। বিজ্ঞপ্তি
অনুমোদন ছাড়া চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নয়
ষ শেষ পৃষ্ঠার পর
নেহাল আহমেদ এই নির্দেশনা জারি করেছেন। দেশের সব বেসরকারি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি এবং কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিকে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) জারি করা এই নির্দেশনায় বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১-এর ১১.১১ ধারা অনুযায়ী ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিতে প্রথম প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর। তবে সমপদে বা উচ্চতর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ইনডেক্সধারীদের জন্য বয়সসীমা শিথিলযোগ্য। এ ক্ষেত্রে উচ্চতর পদ বলতে শুধু প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারী প্রধান বোঝাবে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদির সরকারি অংশ ৬০ (ষাট) বছর পর্যন্ত দেওয়া হবে। তবে ঐতিহ্যবাহী ও মানসম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে এবং সরকারের কোনো আর্থিক সুবিধা বা এমপিও না নেওয়ার শর্তে সরকারের অনুমোদনে শুধু প্রতিষ্ঠান প্রধানের ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে আর্থিকসহ সব দায়ভার বহন করতে হবে। সরকার এর কোনো দায় বহন করবে না। এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের চুক্তিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রধানের মেয়াদ সরকারের আর্থিক সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও কোনোক্রমেই ৬৫ বছরের বেশি হতে পারবে না’। খবর বাংলা ট্রিবিউনের
নির্দেশনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করে জানানো হয়, ইদানীং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, জনবলকাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১-এর ১১.১১ ধারা না মেনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে এবং তা অনুমোদনের জন্য মাউশিতে পাঠানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে চুক্তিভিত্তিক অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ওই শিক্ষক বিধি অনুযায়ী ৬০ বছর পূর্তিতে অবসরে গেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৬ জুনের আদেশ এবং ২০১২ সালের ৯ জুলাইয়ের আদেশ অনুযায়ী অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে সহকারী প্রধান শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার অর্পণ করতে হবে। কোনো প্রতিষ্ঠানে সহকারী প্রধান শিক্ষক না থাকলে জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার অর্পণ করতে হবে।
তবে পরবর্তীতে অধ্যক্ষ বা প্রধান শিক্ষক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়টি সরকারের চ‚ড়ান্ত অনুমোদন সাপেক্ষে ওই পদের দায়িত্বভার পাবেন বলে জানানো হয়।