কোরবানির পশুরহাট স্বাস্থ্যবিধি ও দূরত্ব রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা জরুরি

35

আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে বরাবরের মতো বসেছে পশুর হাট। সাধারণ কোরবানিতে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ, উট ইত্যাদি হালাল পশু জবেহ করে কোরবানি দেয়া হয়। কোরবানির জন্য পশু অনেককে ক্রয় করতে হয়। কেননা দেশের সকল স্তরের মানুষ গবাদি পশু বা কোরবানির পশু লালন পালন করতে পারে না। যে সকল মুসলিমের উপর কোরবানি ওয়াজীব, তাদের অধিকাংশ জন কোরবানির পশু হাট থেকে ক্রয় করে কোরবানি দিয়ে থাকে। সুতরাং সামর্থবানেরা পশু কেনার জন্য কোরবানির হাটে যায়। আর যারা পশুর খামার করে কিংবা ব্যক্তিগতভাবে পশু লালনপালন করে তারা কোরবানির হাটে পশু বিক্রি করতে নিজস্ব লাভের লক্ষে পশুর হাটে ভিড় জমায়। এমনিতেই পশুর হাটে জনসমাগম বেশি হয়। তার উপর কোরবানির হাটে তো আরো বেশি সংখ্যক লোক সমাগম হয়। কেননা একটি পশু নিয়ে একাধিকজন হাটে যায়। আবার ক্রয় করার জন্যও লোকজন বেশি যায়। গরু মহিষ কোন লোক একা একা আনা নেয়া করতে পারে না। গাড়িতে করে নিয়ে যেতেও লোকবল প্রয়োজন হয়। গাড়ির চালক, হেলপার, ক্রেতা-বিক্রেতার পক্ষের মানুষসহ কোরবানির হাটে লোক সমাগম সভাবতই বেশি। তা ছাড়া পশুর হাটে দালাল বা ব্রোকারদের ভিড় লেগেই থাকে। সব মিলিয়ে কোরবানির পশুর হাট করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে দেশে।
দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিজনিত কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, ইত্যাদিস্থানে কোরবানির পশুর হাট বসাতে না দেয়ার পরামর্শ দিয়ে ছিলেন করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সরকার গঠিত ‘জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি’। এরপরও চট্টগ্রাম মহানগরী ও নগরীর বাইরে পশুর হাট বসেছে। সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাট বসানোর কথা বললেও, কোথাও স্বাস্থ্যবিধি এবং শারীরিক দূরত্ব মেনে পশুর হাটগুলোর কেনা-বেচা হচ্ছে না। যে কারণে কোরবানির পশুর হাট দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি করছে। হাট বসাতে না দিয়ে সরকার খামার কিংবা পশু পালনকারী ব্যক্তিদের বাড়ি গিয়ে পশু ক্রয়ের নির্দেশনা দিলে লোক সমাগম এবং স্বাস্থ্যবিধির মান্যতা সহনীয় পর্যায়ে থাকতো।
যা হবার হয়েছে। এখন করার কিছু নেই। প্রতিটি হাটে মাইকে যদিও স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা বলছে তবু দেখা যাচ্ছে কার কথা কে শুনে। অনেককে মাস্ক না পরে পশুর হাটে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যাচ্ছে।
জন-নিরাপত্তা সচিব কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ব্যবস্থা নেবেন বলেছেন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সমন্বয় সভায়। কিন্তু পশুর হাটে তার কোন আলামত এখনো দেখা যাচ্ছে না। সুতরাং পরিস্থিতি যথা পূর্বং তথা পরং।
কোরবানির পশুর হাট করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এখনো সময় আছে সরকার এ ব্যাপারে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে কোরবানির পশুরহাটকে করোনা ভাইরাসের প্রাদূর্ভাব মোকাবেলার উপযোগী করে তুলতে পারবে বলে মনে হয়। ধর্ম রক্ষার পূর্বশর্ত জীবন রক্ষা। সুতরাং স্বাস্থ্যবিধি মানার আওতায় কোরবানির পশুরহাটকে নিয়ন্ত্রণে সরকার ও প্রশাসন কার্যকরভাবে এগিয়ে আসবে এমন আশা সকলের।