কোরবানির গরুর বাহারি যত নাম-দাম

26

আসহাব আরমান

ঈদুল ফিতরের সময় শপিংমলে বিভিন্ন নামের পোশাকের আধিক্য দেখা যায়। বাহারি নামের দেশি-বিদেশি এসব পোশাক ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে থাকে। কোরবানির ঈদে শপিংমলগুলোতে বাহারি নামের পোশাক সাধারণত থাকে না। তবে পশুরহাটগুলোতে হরেক রকম নামের পশু দেখা যায়। রাজাবাবু, সুলতান, লাল বাদশা, কালো মানিক, বাহুবলী, মেসি ও হিরো আলমসহ অসংখ্য নানা রকম বাহারি নামে পশুদের ডাকা হয়। বাহারি নামের এসব পশুর দাম অন্যান্য পশুর চাইতে বেশি। সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা এবং ভালো দাম পাওয়ার আশায় সুন্দর নামে ডাকা হয় কোরবানি পশুকে।
নগরীর নূরনগর হাউজিংয়ে অস্থায়ী গরুর বাজারে ১২ মণ ওজনের একটি গরুর নাম ‘লাল বাদশা’। বিশাল আকৃতির গরুটির দাম হাঁকা হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। গরুটির মালিক কুষ্টিয়ার খামারি রোজদার মÐল। তিনি এবারের কোরবানির হাটে ১৫টি গরু বিক্রি করতে এনেছেন।প্রতিটি গরুর দাম আড়াই থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। তবে একটি গরুর দাম চাইছেন বেশি।
গরুটির মালিক রোজদার মন্ডল বলেন, গত দেড় বছর ধরে গরুগুলোকে যতœ করে বড় করেছি। আশা করছি সবগুলো গরু বিক্রি করতে পারবো। লাল বাদশা’র দাম বেশি, তাই সবাই দরদাম করছে। ৫ লাখের কমে বিক্রি করবো না।
আরেকজন বিক্রেতা জানান, মূলত বড় গরু দেখতে মানুষের আগ্রহ বেশি। তাই এসব বড় গরুকে আমরা বিভিন্ন নামে ডাকি। আকর্ষণীয় নামে ডাকলে গরুটির প্রচার বেশি হয়। এতে দাম বেশি উঠে।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মো. হাসান, মো. সালাউদ্দিন ও সেলিম যৌথ প্রচেষ্টায় বড় করেছেন অস্ট্রেলিয়ান জাতের একটি ষাঁড়। ৬ বছর ধরে নিজের পরিবারের সদস্য মনে করে গরুটি লালন পালন করেছেন তারা। আদর করে ষাঁড়টির নাম রেখেছেন ‘রাজাবাবু’। ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য সাড়ে ৯ ফুটের বেশি, উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি, ওজন ৩০ মণ। অস্ট্রেলিয়ান জাতের ষাঁড়ের সিমেন ব্যবহার করে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে জন্ম হয়েছে ষাঁড়টির। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিক্রির জন্য ষাঁড়টির দাম হেঁকেছেন ১২ লাখ টাকা। ষাঁড়টি খামার থেকে কেউ কিনলে এর সাথে বিনামূল্যে ছাগল দেয়া হবে। এছাড়া ষাঁড়টি ক্রেতার বাড়িতেও পৌঁছে দেয়া হবে একেবারে টাকা ছাড়া। গরুটি দেখতে প্রতিদিন মানুষের ভিড় জমছে খামারে। এর মধ্যে বিক্রি না হলে ষাঁড়টি দুয়েকদিন পর চট্টগ্রাম নগরীর গরুর হাটে নিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন মালিকেরা।
গরুটির মালিক মো. হাসান বলেন, তিনজনে মিলে ২০ বছর আগে পাহাড়ি এলাকায় খামারটি গড়ে তোলেন। খামারে ছোট-বড় গাভী ও ষাঁড় মিলে ৫২টি গরু রয়েছে। এবার বিক্রির জন্য উপযোগী হয়েছে তিনটি গরু। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় গরুটি হচ্ছে ‘রাজাবাবু’। এটি উত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় গরু দাবি করেন তিনি। এছাড়া এই খামারে ২১ মণ ওজনের ‘বাহুবলী’ ও ২০ মণ ওজনের ‘কালো মানিক’ রয়েছে। জন্মের বছর খানেক পর ষাঁড়গুলোর নাম দেয়া হয়।
চট্টগ্রাম ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে কোরবানির হাটে পশুর হরেক রকম নাম দেওয়া হয়েছে। টাঙ্গাইলে ৩২ মণ ওজনের একটি গরুর নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেসি’, বগুড়ায় ৯০০ কেজি ওজনের একটি গরুর নাম রাখা হয়েছে ‘হিরো আলম’ এবং খুলনায় বড় আকৃতির একটি গরুর নাম রাখা হয়েছে সম্রাট।