কোনো নেতার কথায় নয় পদবী পাবেন ত্যাগীরাই

20

নিজস্ব প্রতিবেদক

সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূলকে সুসংগঠিত করতে কাজ শুরু করেছে মহানগর আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে চলমান আছে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি। ১৫টি ওয়ার্ড এ কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করে মহানগর আওয়ামী লীগের কাছে তালিকা জমা দিয়েছে। কর্মসূচি চলাবস্থাতেই নগর আওয়ামী লীগের ১২৯টি ইউনিটের সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে ইউনিট সম্মেলন শুরু হবে। এরপরেই ধারাবাহিকভাবে ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করা হবে। গতকাল সকালে নগরীর আইসিসি কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত তৃণমূলের বর্ধিত সভা থেকে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বর্ধিত সভায় উপস্থিত দুইজন নেতা বলেন, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উনার বক্তব্যে সরাসরি বলে দিয়েছেন, কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে কমিটিতে ঠাঁই দেয়া হবে না। কোনো নেতার কথায় কাউকে পদ দেয়া হবে। অমুক ভাই, তমুক ভাইয়ের কথা বলে পদ মিলবে না। যোগ্য ও ত্যাগীরাই পদ পাবেন। এছাড়াও সদস্য নবায়ন ও দলীয় পদ দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনাও দেন নেতারা।
জানা যায়, বর্ধিত সভায় ১৬ নভেম্বর থেকেই তৃণমূলের ইউনিট কমিটি গঠন শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কমিটি গঠনে সমন্বয় করবেন ৪৩ জন নগর আওয়ামী লীগ নেতা। যেখানে জটিলতা আছে সেখানে দলের সিনিয়র নেতারা তদারকি করবেন। অনেক জায়গায় জামায়াত-বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ ঘটেছে। যারা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদ না দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়াও গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে যেসব নেতা বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন তাদেরকেও গুরুত্বপূর্ণ পদে না আনতে বলা হয়েছে। সামাজিকভাবে বিতর্কিত, ভূমিদস্যু, খুন ও মাদকের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাদেরকে পদ না দেয়ার কথা বলা হয়েছে। যেসব এলাকায় সদস্য সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে তা দ্রুত নগর কমিটির কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এমন কেউ যদি তথ্য ফরম পূরণ করেন তা যাচাইবাছাই করে নগর কমিটি সিদ্ধান্ত দিবে। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতা যদি আওয়ামী লীগের পদ পেতে চায় তাহলে তাঁকে পদত্যাগ পত্র জমা দিতে হবে।
সভায় বক্তব্যকালে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, কেউ ইচ্ছে করলেই পদ-পদবী পেতে পারেন না। জন ও কর্মী সম্পৃক্ততা না থাকলে কেউ নেতা হতে পারবেন না। আমিও যদি নেতা বানাতে চাই তাও সম্ভব নয়। নেত্রী যদি না চান কখনও সেই ইচ্ছা পূর্ণ হবে না। তাই পদ-পদবীর জন্য ধাক্কাধাক্কি ও প্রতিযোগিতা এবং পারস্পরিক চরিত্র হননের কোনো প্রয়োজন নেই। লিয়াকত আলী হত্যাসহ কোনো হত্যার সাথে যুক্ত কারও আওয়ামী লীগে জায়গা হবে না। যারা জায়গা দেবেন তাদেরও দল থেকে সরে যেতে হবে।
তিনি বলেন, সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ধারা, উপ-ধারা অনুসরণ করেই তৃণমূল স্তরের কমিটিগুলো গঠিত হবে। ১৬ নভেম্বর থেকে মহানগর আওয়ামী লীগ নির্ধারিত তারিখ ও স্থান অনুযায়ী প্রথমে ইউনিট সম্মেলন হবে এবং তিনটি করে ইউনিট সম্মেলন শেষ হলে ওয়ার্ড সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় তৃণমূলের বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, এড. সুনীল সরকার, এড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, উপদেষ্টা শফর আলী, শেখ মো. ইসহাক, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, হাসান মাহমুদ সমশের, এড. শেখ ইফতেখার সায়মুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান ছিদ্দিকী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, হাজী জহুর আহমেদ, মাহবুবুল হক মিয়া, জোবায়েরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, জালাল উদ্দিন ইকবাল, আবদুল আহাদ, মোহাম্মদ আবু তাহের, ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, মো. শহিদুল আলম, নির্বাহী সদস্য এম. এ জাফর, মো. আবুল মনছুর, পেয়ার মোহাম্মদ, সৈয়দ কামরুল হাসান বুলু, গাজী শফিউল আজিম, বখতেয়ার উদ্দিন খান, এড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, মোহাব্বত আলী খান, সৈয়দ আমিনুল হক, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কিষাণ চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, হাজী দোস্ত মোহাম্মদ, আবদুল লতিফ টিপু, রোটারিয়ান মো. ইলিয়াছ, ড. নেছার উদ্দিন মঞ্জু, হাজী বেলাল আহমেদ, মোরশেদ আকতার চৌধুরীসহ ১৫ থানা, ৪৩ সাংগঠনিক ওয়ার্ডের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, আহব্বায়ক, যুগ্ম আহব্বায়কসহ ১২৯টি ইউনিট আওয়ামী লীগের অধিকাংশ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকগণ তৃণমূলের এ বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন। বর্ধিত সভায় অংশ গ্রহণকারীদের দলীয় সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি পালনে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়।