কেন্দ্রে গোলযোগ হলেই ভোট বন্ধ

18

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোটে গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা করলেই ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হবে। নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও অংশগ্রহণকারীদের সম্মিলিত প্রয়াসে অতীতে সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এই নির্দেশনা দেন তিনি। আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব বলেন, নির্বাচনকে আরো স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্যা করার লক্ষ্যে নির্বাচনে ইতোপূর্বে ব্যবহৃত ম্যানুয়াল ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে।যা স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে মাইলফলক হিসেবে কাজ করছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে, নিরাপদে ও নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হতে পারেন সেজন্য সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
সভা শেষে নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন চায় একটি স্বচ্ছ ও সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন। এবং সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।’ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো প্রার্থী ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করলে বা সতর্ক করার পর আবারও একই ধরনের আচরণ করলে সেক্ষেত্রে আমরা তার প্রার্থিতা বাতিল করেছি। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষেত্রে আইনে আমরা প্রার্থিতা বাতিল করতে পারি না। সেই কারণে বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়নের এক প্রার্থীর নামে মামলা করা হয়েছে। নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। আগামীতে আদালত সিদ্ধান্ত দেবেন। অথবা নির্বাচন কমিশন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবে।’
‘মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তসাপেক্ষে সন্দ্বীপে একটি ইউনিয়নের তফসিল বাতিল করা হয়েছে,’ বললেন নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।
কমিশনার আরও বলেন, বাঁশখালীতে আরেকজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্তসাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিতে কারো ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ মনে হলে কমিশন ব্যবস্থা নেবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি জেলায় শক্তভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এবং বিভিন্ন নির্বাচনে আমরা দেখেছি, পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চমৎকার দায়িত্ব পালন করেছে। অনেক জায়গায় নির্বাচন সুন্দর এবং সুষ্ঠু হয়েছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন এ কার্যক্রমকে আরো উচ্চতর মাত্রায় নিয়ে যেতে চায়। যেসব এলাকায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে তা সূ²ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন চায় প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্ব আইনসঙ্গতভাবে এবং নিরপেক্ষতার সাথে পালন করবে। অন্যথায় নির্বাচন কমিশন তার আইনসঙ্গত ক্ষমতা প্রয়োগ করে নির্বাচনে ব্যর্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছাম্মদ সুমনী আকতার, আনোয়ারা উপজেলা নিবাচনী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমদ, বাঁশখালীর ইউএনও সাইদুজ্জামান চৌধুরী, বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন, ফটিকছড়ির ভূঁজপুর থানার ওসি হেলাল উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অফিসার ইনচার্জ ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।