কুড়িয়ে পাওয়া কাগজ থেকে খুনের রহস্য সমাধান

17

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় পাওয়া এক মৃতদেহের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ওই হত্যা রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে কুড়িয়ে পাওয়া এক টুকরো ছেড়া কাগজের মাধ্যমে।
পুলিশ বলছে, সপ্তাহ খানেক আগে হাতিরঝিল থেকে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে তাদের একটি দল।
মরদেহটির হাত-পা রশি দিয়ে বেধে এটি বিছানার চাদর, মশারি আর পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে হাতিরঝিল লেকের মেরুল-বাড্ডা প্রান্তে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। সেখান থেকেই মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। তবে মরদেহটিকে যাতে শনাক্ত করা না যায়, সেজন্য হাতের আঙুল ও চেহারা বিকৃত করে দিয়েছিল হত্যাকারীরা।
হত্যা সম্পর্কিত ক্লু’র খোঁজে মৃতদেহের চারপাশ খুঁজতে থাকে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। লেকের যে স্থানে এ মৃতদেহটি ভেসে ছিল, শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে প্রায় ৫০ মিটার উত্তরে একটি ছেড়া কাগজ পায় পুলিশ। সেটিতে লিখে রাখা একটি মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে পুরো হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ধার করে তারা।
এই ঘটনার তদন্ত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হাফিজ আল ফারুক।
একটি ছেড়া কাগজ থেকে কিভাবে এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করা হল- এমন প্রশ্নের উত্তরে এডিসি হাফিজ আল ফারুক বলেন, হত্যাকারীরা নিহত ব্যক্তির মোবাইল ফোনটি লাশটি ফেলে দেয়ার সময় সাথে করে নিয়ে এসেছিল। আর ওই মোবাইল ফোনটি নতুন হওয়ার কারণে সেটি যাতে ভুল না হয় সেজন্য নম্বরটি কাগজে লিখে রেখেছিল হত্যাকারী। আর ওই কাগজটি দিয়েই মোড়ানো ছিল নিহতের মোবাইল ফোনটি, জানান তিনি।
হত্যাকারী মরদেহটি ফেলে দেয়ার পর কিছু দূরে গিয়ে মোবাইল ফোনটিও পানিতে ছুড়ে ফেলে দেয়। কিন্তু মোবাইলটি পানিতে পড়ে ডুবে গেলেও কাগজটি হালকা হওয়ার কারণে পানিতে না পড়ে পানির কাছাকাছি মাটিতে পড়ে। ফারুক বলেন, লাশটি ফেলে দেয়া হয় বিকেল সাড়ে চারটার দিকে। পুলিশ খবর পেয়ে সাতটার দিকে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। আর ঘণ্টা খানেক পরে গেলে হয়তো কাগজটি নাও পাওয়া যেতে পারতো।
তবে এরপরেও হত্যা রহস্য উদ্ঘাটন করা যেতো বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘কোনো ক্লুলেস ঘটনাই আসলে শেষ পর্যন্ত আর ক্লুলেস থাকে না’। খবর বিবিসি বাংলার