কিশোর গ্যাং লিডারদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি

5

নিজস্ব প্রতিবেদক

নগরীর আকবরশাহ এলাকায় কিশোর গ্যাং এর হামলায় নিহত চিকিৎসক কোরবান আলী হত্যাকান্ডের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় এবং এলাকায় কিশোর গ্যাং কালচার বন্ধ ও তাদের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে এলাকাবাসী। আকবরশাহ থানার সামনে ৯নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডবাসী ও সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধন ও সমাবেশে স্থানীয় বিভিন্ন সমাজ কল্যাণ পরিষদ, পাড়া, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ক্লাবসহ অধিবাসীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। এতে সংহতি প্রকাশ করেন উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড, আকবরশাহ ও পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগ ও তাদের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ নেতৃবৃন্দ। মানববন্ধনে সম্প্রতি আকবরশাহ এলাকার উত্তর পাহজাড়তলী ওয়ার্ডের পশ্চিম ফিরোজশাহ’য় চিকিৎসক কোরবান আলীকে হত্যাকারী ও তার সন্তানদের উপর হামলাকারী কিশোর গ্যাং লিডার গোলাম রসুল নিশানসহ তার সহযোগীদের ছবি প্রদর্শন করা হয়। এতে লেখা ছিল- কিশোর গ্যাং লিডার গোলাম রসুল নিশান ও তাদের গডফাদারকে আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা ও এলাকায় কিশোর গ্যাং বন্ধের দাবি।
গতকাল শুক্রবার বিকাল ৩টায় আকবর শাহ থানার সামনে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, আকবরশাহ এলাকায় একের পর এক অপরাধীরা চিহ্নিত হচ্ছে। তাদের নিয়ে গণ্যমাধ্যমে নেতিবাচক সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। কিশোর গ্যাং নামীয় সিন্ডিকেট করে ছোট ছোট স্কুলমুখী ছেলেদের জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে এসব গ্যাং এ যুক্ত করতে বাধ্য করছে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা কিছু উঠতি কিশোর-তরুণ ও যুবক। আর তাদের পৃষ্টপোষকতা দিয়ে নিজের নানান অপকর্ম যেমন জায়গা দখল, পাহাড়কাটা, খাল ভরাট, সরকারি গাছ কাটা, সরকারি জায়গা দখল-বিক্রিসহ নানান অপরাধে ব্যবহার করছে রাজনৈতিক পরিচয়ধারী কিছু চিহ্নিত মুখোশধারী সন্ত্রাসী। তারা এলাকার উঠতি-কিশোর-তরুণদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রকাশ্যেই রাস্তাঘাটে-চলাচলের পথে মানুষদের উপর হামলা করছে, মারধার করছে, হত্যা করছে। সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে বারংবার এসব বন্ধের নির্দেশনা এলেও কোনো কিছুতেই কাজ হচ্ছে না কিছু রাজনৈতিক নেতাধারী প্রভাবশালীদের কারণে। ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহায়তা চাওয়া কিংবা তথ্যদাতাদের তথ্য কিভাবে অপরাধীদের কাছে চলে যায় সে বিষয়েও প্রশ্ন রাখেন বক্তারা।
তারা বলেন, ৯৯৯ নম্বরে যারা বিভিন্ন অপরাধের তথ্য দেন, তাদের তথ্য গোপন থাকার কথা। কিন্তু কিভাবে তা সন্ত্রাসীদের কাছে চলে যায় তার জবাব সংশ্লিষ্টরা দিতে হবে। তারা ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে বলেন, এর মধ্যে যদি গোলাম রসুল নিশান ও তার সহযোগিদের গ্রেপ্তার করা না হয় এবং চিহ্নিত গডফাদারকে আইনের আওতায় আনা না হয় তাহলে আমরা সংশ্লিষ্টদের স্মারকলিপি দিয়ে রাস্তায় কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো। ডা. কোরবান আলীর হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার মাধ্যমে কিশোর গ্যাং কালচার বন্ধ করা না হলে মানুষ আর প্রতিবাদ করবে না। উঠতি কিশোর-তরুণরা প্রতিবাদী হবে না, সত্যের পক্ষে কথা বলবে না। ফলে সমাজ ও রাষ্ট্র চরম হুমকিতে পড়বে।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন নিহত চিকিৎসক কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজা রানা, উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আহব্বায়ক সৈয়দ সরোয়ার মোরশেদ কচি, যুগ্ম আহŸায়ক মো. এরশাদ মামুন, আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আলতাফ হোসেন, পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নিয়াজ আহমেদ চৌধুরী, সহ-সভাপতি আব্দুল জব্বাব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর আহমেদ মাসুম, আকবরশাহ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. জাহেদসহ স্থানীয় সামাজিক সংগঠক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, শাহাজাহান চৌধুরী, ফজলুল করিম টিপু, সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের নারীনেত্রী সবিতা বিশ্বাস, মিলি চৌধুরী, জিয়াউর রহমানসহ আব্দুল আলী নগরসমাজ, নোয়াপাড়া সমাজ, ফকির তালুক সমাজ, বেলতলীঘোণা সমাজ, শহীদ লেন সমাজ, বিশ্ব কলোনির বিভিন্ন ব্লক ভিত্তিক সমাজ, বাহির ফিরোজশাহ, ভিতর ফিরোজশাহ, পশ্চিম ফিরোজশাহ, জানারখীল সমাজকল্যাণ পরিষদ, নজির কমিশনার সমাজের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।