কাশ্মীরে বিধিনিষেধ ‘বিব্রত’ ভারতীয় কর্মকর্তার পদত্যাগ

65

জম্মু ও কাশ্মীরের লাখ লাখ মানুষের ‘মৌলিক অধিকার’ খর্ব করায় ‘বিব্রত’ এক ভারতীয় প্রশাসনিক পরিষেবা (আইএএস) কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন। বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার পর কয়েক সপ্তাহ ধরে জম্মু ও কাশ্মীরের লোকদের ‘মৌলিক অধিকার’ খর্ব করা তার পদত্যাগের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন আইএএস কমকর্তা কান্নান গোপীনাথন।
তিনি বলেন, আমরা পদত্যাগের কারণে কোথাও কোনো প্রভাব পড়বে না, কিন্তু আমার মনে হয় নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থাকা উচিত। খবর বিডিনিউজের
ভারতের কেন্দ্রশাসিত দাদরা ও নগর হ্যাভেলির কয়েটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের সচিব ৩৩ বছর বয়সী গোপীনাথন। তিনি লোকসানে থাকা একটি সরকারি বিদ্যুৎ বিতরণ প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রেখেছিলেন।
গত বছর কেরালার ভয়াবহ বন্যার সময় পরিচয় গোপন রেখে টানা আট দিন বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছিলেন। তিনি বন্দর থেকে ত্রাণসামগ্রী নামিয়ে মাথায় করে তা ত্রাণ শিবিরে বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে পরিচয় প্রকাশ হওয়ার পর খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন তিনি।
গোপীনাথন বলেন, কাশ্মীরে ২০ দিন ধরে লাখ লাখ মানুষের মৌলিক অধিকার স্থগিত করে রাখা হয়েছে। আর ভারতের অনেকের কাছেই এটি ঠিক আছে বলে মনে হচ্ছে। ২০১৯ সালে ভারতে এটি ঘটছে। আর্টিকেল ৩৭০ বা এটি রদ করা ইস্যু না। কিন্তু নাগরিকদের এটি নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার দেওয়া হচ্ছে না, এটাই প্রধান ইস্যু। এ সিদ্ধান্তকে তারা স্বাগত জানাতে পারে বা এর প্রতিবাদ করতে পারে, এটিই তাদের অধিকার। এই বিষয়টিই তাকে পদত্যাগ করার মতো যথেষ্ট ‘বিব্রত’ করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এমনকি যখন একজন সাবেক আইএএস কর্মকর্তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হলো, সিভিল সোসাইটির কেউ কোনো প্রতিক্রিয়াও জানালো না। এই দেশের অধিকাংশের কাছেই এটি ঠিক আছে বলে মনে হচ্ছে বলেন তিনি।
সাত বছর ধরে আইএএস কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপালন করা গোপীনাথন ২১ অগাস্ট পদত্যাগ পত্র পেশ করেছেন।
এ বক্তব্যে তিনি দিল্লির জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে সিভিল সার্ভিস থেকে পদত্যাগ করে অধিকার আন্দোলনকারীতে পরিণত হওয়া শাহ ফয়সালের বিষয়ে ইঙ্গিত করেছেন। বিদেশে যাওয়ার জন্য ফয়সাল দিল্লি বিমানবন্দরে একটি ফ্লাইটে ওঠার সময় তাকে আটক করে শ্রীনগরে ফেরত পাঠানো হয়। ৩৭০ ধারা রদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হওয়ার তাকে কাশ্মীরে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।
কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, মোদী সরকারের সঙ্গে নির্বাচনের সময়ও বিরোধ হয়েছিল গোপীনাথনের। মোদী সরকার ক্ষমতায় ফেরার পর তাকে তুচ্ছ কারণে শোকজ নোটিশ দেওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে তার পদত্যাগ পত্র এখনও গৃহীত হয়নি। সেটা নিছকই ‘পদ্ধতিগত বিষয়’ বলে মনে করছেন তিনি। সিস্টেমে থেকেই সিস্টেম বদলাতে চেয়েছিলেন তিনি কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন গোপীনাথন।