‘কালিপুইরগা লিচু, আনি দনা কিছু’

10

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘কালিপুইরগা লিচু, আনি দনা কিছু’- এ আবদার উপক্ষো করা মুশকিল। রসে ভরা এ লিচুর রয়েছে আলাদা ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য। স্বাদেও স্বতন্ত্র। চট্টগ্রামে উৎপাদিত লিচুর মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। বাজারে এসেছে লিচু। শুরু থেকে চাষিরা বৃষ্টির জন্য হাহাকার করলেও শেষ পর্যায়ে এসে বেশ কয়েকদিন বৃষ্টি হওয়ায় চাষিদের ভয় ধরে যায়। তবে ঝড় ও বাতাস হলেও শিলাবৃষ্টি না হওয়ায় অনেকটা স্বস্তিতে চাষিরা। কিন্তু লিচু বাজারে আসার প্রথম সপ্তাহের তুলনায় বৃষ্টির কারণে বর্তমানে দাম কমে গেছে।
এই বিষয়ে কালীপুরের লিচু চাষি মোহাম্মদ হাসান জানান, এবার চলতি মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় লিচুর ভালো ফলন হয়েছে। তবে মুকুল ঝরে পড়ার পর হালকা বৃষ্টিপাত হলে লিচুর আকার আরও বড় হতো।
বাঁশখালী কৃষি বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, বাঁশখালীতে এবার সাড়ে ৭ শত হেক্টর লিচু বাগানে ফলন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হয়েছে কালীপুর ইউনিয়নে। এই ইউনিয়ন এমনিতেই লিচুর জন্য সারাদেশে প্রসিদ্ধ। স্থানীয় জাতের লিচুর পাশাপাশি উন্নত জাতের লিচু বোম্বাই, চায়না ৩, মোজাফফর চাষ দিন দিন বাড়ছে। শুরুতে প্রতি শত লিচুর দাম ২০০/২৫০ টাকা হলেও বর্তমানে তা অনেক কমে এসেছে। প্রচুর পরিমাণ লিচু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কালীপুর ছাড়াও সাধনপুর, পুকুরিয়া, বৈলছড়ি, গুণাগরি, জঙ্গল জলদি, জঙ্গল চাম্বল, পুইছড়িসহ প্রতিটি ইউনিয়নেই বাণিজ্যিক ও ঘরোয়াভাবে লিচু চাষ হয়। উপজেলায় এবার ৭ শত হেক্টর বাগানে লিচু চাষ হলেও এর মধ্যে শুধু কালীপুরে রয়েছে ৩০০ হেক্টর। কালিপুরে স্থানীয় জাত ছাড়াও রাজশাহী বোম্বে, বারি ১, ২, ৩ ও ৪ এবং চায়না-৩ জাতের লিচু বাগান রয়েছে। কালিপুরের লিচু আকারে ছোট, তবে স্বাদে অনন্য। তাই চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষের কাছে কালীপুরের লিচু বেশ সমাদৃত হয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। কালীপুর, সাধানপুরসহ বিভিন্ন স্থানে থাকা লিচু বাগানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, থোকায় থোকায় গাছে গাছে পাকা লিচু শোভা পাচ্ছে। উপজেলার পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর,পৌরসভা সদর জলদী হয়ে বৈলছড়িসহ বিভিন্নস্থানে পাহাড়ি এলাকাজুড়ে সড়কের পাশে, বাড়ির আঙ্গিনায়, পাহাড় ও লোকালয়ের লিচু বাগানে এখন প্রচুর লিচু।
এদিকে সাধনপুর এলাকার লিচু চাষি মোহাম্মদ আবদুল হক জানান, এবার লিচুর ভাল ফলন হয়েছে। কিন্তু প্রথমদিকে বৃষ্টি না হওয়ায় লিচু তেমন মোটাতাজা হয়নি। আরেকটু বৃষ্টি হলে লিচুগুলো আরও রসালো হতো। প্রথমদিকে লিচু প্রতি হাজার ২০০০/২২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।