কার্যনির্বাহী সভায় নেতাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়

47

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহানগর আওয়ামী লীগের ইউনিট সম্মেলন শুরু হচ্ছে আগামীকাল। প্রথমদিন পাঁচটি ওয়ার্ডের পাঁচ ইউনিটের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ইউনিটেই সম্মেলনের সমন্বয়ে নগর আওয়ামী লীগের একজন করে নেতা উপস্থিত থাকবেন। গতকাল অনুষ্ঠিত নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতার মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে বলেও জানা যায়। এছাড়া নগর কমিটিতে না থাকলেও দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের এক নেতা সভাস্থলে গিয়ে সম্মেলনের বিরোধিতা করেন। সেখানে ত্যাগী ও পুরানো নেতাদের বাদ দিয়ে সম্মেলনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেন ঐ নেতা।
সভায় উপস্থিত নেতারা জানান, ১৬ নভেম্বর বাগমনিরাম ওয়ার্ড, আন্দরকিল্লা, দেওয়ান বাজার, এনায়েত বাজার ও মাদারবাড়ি ওয়ার্ডর ‘এ’ ইউনিটের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ নভেম্বর এসব ওয়ার্ডের ‘বি’ ইউনিটের এবং ১৮ নভেম্বর ‘সি’ ইউনিটের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডে নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান মাহমুদ হাসনী, আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে উপ দপ্তর সম্পাদক জহরলাল হাজারী, বাগমনিরাম ওয়ার্ডে সদস্য আব্দুল লতিফ টিপু, এনায়েত বাজার ওয়ার্ডে আইন বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ডে শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক মাহবুবুল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইউনিট সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্বস্ব ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। প্রধান বক্তা থাকবেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সভাপতিত্ব করবেন ইউনিটের বর্তমান সভাপতি। নগর আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা সমন্বয়কের ভূমিকায় থাকবেন।
সভা চলাকালে কয়েকজন নেতা সম্মেলনের বিভিন্ন ত্রæটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। এ নিয়ে নেতাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। সভায় উপস্থিত নগর আওয়ামী লীগের তিনজন নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিম চৌধুরী নগর আওয়ামী লীগের কমিটি আট বছর ধরে চলছে বলে জানান। তিনি এসময় এটিকে অবৈধ কমিটি বললে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। নগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হাসান মো. শমসের এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে মেয়রের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনি অবৈধ না বলে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বলতে পারেন। এটা আপনার বলা উচিত হয়নি।’
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে আগে ছয়টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু গতকালের সভায় একটি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেয়া হলে তিনি এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। তিনি আগের সভার এজেন্ডা আলোচনা করতে বললে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীনের সাথে বাক্যবিনিময় হয়। একইভাবে নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালামও সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেন। সভার এক পর্যায়ে সেখানে হাজির হন চসিক নির্বাচনে দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডের পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী রফিকুল আলম বাপ্পী। তিনি এসময় ত্যাগী ও পুরনো নেতাদের বাদ দিয়ে সম্মেলনের আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেন এবং সম্মেলন স্থগিত করার দাবি জানান। এসময় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম নাছির উদ্দীন তাকে ধমক দেন।
জানতে চাইলে দেওয়ান বাজার ওয়ার্ডের বাসিন্দা রফিকুল আলম বাপ্পী পূর্বদেশকে বলেন, মহিউদ্দিন ভাইয়ের সাথে আমরা যারা ছিলাম সবাইকে বাদ দিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে মহানগর আওয়ামী লীগ। সেখানে অনেক ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়েছেন হাসনী ভাই। মেয়াদোত্তীর্ণ ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ পুরো কমিটি সাজিয়েছে। আমি বঞ্চিত সকল নেতার পক্ষ থেকে নগর আওয়ামী লীগের সভায় ইউনিট ও ওয়ার্ড কমিটি স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছি। ১৫০-২০০ জন পুরানো নেতাকে সদস্য ফরম পূরণ করতে দেয়া হয়নি। আমাদেরকে বঞ্চিত করে সম্মেলন করতে দিব না। সম্মেলনে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে এর দায় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে নিতে হবে। উনি আমাকে ধমক দিয়েছেন। বলেছেন, তুমি সম্মেলন স্থগিত করার কে?