কাভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার বসিয়ে গ্যাস বিক্রি

26

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাতকানিয়ার কেরানীহাটে কাভার্ডভ্যানের মধ্যে সিলিন্ডার বসিয়ে গ্যাস বিক্রির অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। অভিযানে ৬১৪টি সিলিন্ডারসহ চারটি কাভার্ডভ্যান জব্দ করা হয়েছে। গত রবিবার রাতে সাতকানিয়ার কেরানীহাট-বান্দরবান সড়ক থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল সোমবার র‌্যাব-৭ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
র‌্যাব জানিয়েছে, কাভার্ডভ্যানে সিলিন্ডার বসিয়ে ভ্রাম্যমাণ রিফুয়েলিং স্টেশন বানিয়ে তারা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্যাস বিক্রি করে আসছিল। অবৈধভাবে তৈরি এই রিফুয়েলিং স্টেশনের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হলে ভয়াবহ বিপর্যয় হতে পারে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন আজিজুল হক (৪৫), মো. আলমগীর (৪০) ও হুমায়ুন কবির (২৭)।
র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, ‘প্রথমত- ভ্রাম্যমাণ গাড়িতে সিলিন্ডার থেকে গ্যাস বিক্রির জন্য বিস্ফোরক অধিদফতরের কোনো অনুমোদন তাদের নেই। যে ডিস্ট্রিবিউশন মেশিন থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হয়, সেই মেশিনের সঙ্গে বিদ্যুতের সংযোগ আছে। আবার একই সংযোগ থেকে আলোর জন্য লাইট লাগানো হয়েছে। এর ফলে যেকোনো সময় শটসার্কিট হয়ে আগুন ধরতে পারে এবং সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে পারে’।
তিনি আরও বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডারসমূহ অবৈধ ও সম্পূর্ণ অনিরাপদ পদ্ধতিতে একত্রে কাভার্ডভ্যানে স্থাপন করা হয়েছে, যা নিয়ম বহির্ভূত ও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। উক্ত সিলিন্ডারসমূহের মেয়াদ সম্পর্কিত কোনো তথ্যাদিও জব্দকৃত কাভার্ডভ্যান ও আটককৃত আসামিরা দিতে পারেনি। এছাড়াও আসামিদের সাথে কথা বলে জানতে পারি- এ সকল সিলিন্ডার অনেক পুরাতন এবং কখনোই এগুলোর নিরাপত্তা ও কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়নি। ফলে, এ সকল সিলিন্ডার হতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা, পরিবেশ ও মানব বিপর্যয় ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও কিছু কিছু সিলিন্ডার পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, তা অত্যন্ত নাজুকভাবে সংযুক্ত করা যা কাপড় দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। ফলে কোনো ধরনের বিস্ফোরণ ঘটলে তার ফলাফল অত্যন্ত ভয়াবহ হতে পারে’।
র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘মূলত এই চক্রটি সিএনজি গ্যাস সংগ্রহ করে বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ সিএনজি স্টেশন স্থাপন করে প্রতি লিটার প্রচলিত বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করে। সিএনজি স্টেশনে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ৪৩ টাকা দরে বিক্রির পরিবর্তে চোরাই পথে ৬২ টাকা দরে বিক্রি করে এবং সরবরাহকারীরা পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে সুযোগ অনুযায়ী আরও বেশি দরে বিক্রি করে। এছাড়াও চক্রটি মূলত সিএনজি ফিলিং স্টেশনের আড়ালে সরাসরি গাড়িতে জ্বালানি সরবরাহ করার পাশাপাশি বিশেষ প্রক্রিয়ায় কাভার্ডভ্যানের ভেতর সিলিন্ডার স্থাপন করে মিটার ব্যতিত মূল গ্যাস লাইন থেকে গ্যাস মজুদ করে তা অবৈধভাবে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, বাঁশখালীসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় চড়া মূল্যে বিক্রি করে। প্রত্যেকটি কাভার্ডভ্যানে আনুমানিক গড়ে ১৫৩টি করে সিলিন্ডার স্থাপন করা রয়েছে’।