পূর্বদেশ অনলাইন
কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশ বিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে প্রতিবছরের মতো এবারও তিন মাস সব ধরনের মাছ ধরা, বাজারজাতকরণ ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মাছধরা বন্ধকালীন হ্রদ নির্ভরশীল রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলার ১০ উপজেলার ২৪ হাজার ৯৫৩ জেলে পরিবারকে মে ও জুন এ দু’মাসের জন্য ২০ কেজি করে ৯৯৮ টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তবে তিন মাস বন্ধকালীন সময়ের মধ্যে দুই মাসের জন্য ২০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হলেও জুলাই মাসের বরাদ্দ পাননি জেলেরা।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ বন্ধকালীন মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় হ্রদ তীরবর্তী রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির জেলার ১০ উপজেলার ২৪ হাজার ৯৫৩টি জেলে পরিবারকে মে ও জুন মাসের জন্য মাসিক ২০ কেজি হারে ২ মাসে ৪০ কেজি করে সর্বমোট ৯৯৮ দশমিক ১২ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকদের অনুকূলে মঞ্জুরি করা হয়েছে। ভিজিএফ সহায়তার আওতায় খাগড়াছড়ির দুই উপজেলার ২ হাজার ৭৭৬ জেলে পরিবার ১১১ দশমিক ৪ টন ও রাঙামাটির ৯ উপজেলার ২২ হাজার ১৭৭ জেলে পরিবার ৮৮৭ দশমিক ৮ টন চাল পাবে। এরমধ্যে হ্রদ তীরবর্তী খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার ১ হাজার ৫৯১ জেলে পরিবার ৬৩ দশমিক ৬৪ টন ও দীঘিনালা উপজেলার ১ হাজার ১৮৫ জেলে পরিবার ৪৭ দশমিক ৪ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছে। এদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দপত্রে বেশ কয়েকটি শর্তাবলীর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। শর্তাবলীর মধ্যে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসকরা মঞ্জুরিকৃত ভিজিএফ চাল কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য আহরণে বিরত থাকা নিবন্ধিত মৎস্যজীবীদের মধ্যে মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে আগামী ১০ জুনের মধ্যে উত্তোলন ও বিতরণ সম্পন্ন করবেন এবং নিরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় হিসাব সংরক্ষণ করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা বরাদ্দ প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের অনুকূলে উপ-বরাদ্দ দেওয়া ও সংশ্লিষ্ট জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। আবার ইউএনওরা উপ বরাদ্দ পাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য উত্তোলন করে বিতরণ কর্মসূচি তৈরি করতে কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্র ব্যবস্থাপক ও সংশ্লিষ্ট মৎস্য কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। কার্ডধারী জেলে ব্যতীত অন্য কাউকে ভিজিএফ চাল দেওয়া যাবে না। ভিজিএফ বিতরণকালে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ট্যাগ অফিসার ও কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণনকেন্দ্রের প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রসঙ্গত, প্রতিবছরের ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। এ সময় হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশ বিস্তার ও প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিতকরণে তিন মাস সব ধরনের মাছ শিকার, বাজারজাতকরণ ও পরিবহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এছাড়া স্থানীয় পর্যায়ের বরফকলগুলো বন্ধের পাশাপাশি নিয়মিত হ্রদ টহলে থাকে বিএফডিসির মনিটরিং টিম।
