কাপ্তাইয়ে এবার ইউপি সদস্য খুন

7

রাঙামাটি ও কাপ্তাই প্রতিনিধি

কাপ্তাইয়ে ইউপি নির্বাচনে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ইউপি সদস্য সজিবুর রহমান (৪০) নিহত হন। আহত হন আরও ৩ জন। আহতদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় ৭ জনকে। গত মঙ্গলবার রাত ১১টায় কাপ্তাই নতুন বাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ।
সজিবুর রহমান রাঙামাটি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য। তিনি কাপ্তাই সদর ইউপি সদস্য হিসেবে টানা দুইবার নির্বাচিত হন। তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয় বলে জানান কাপ্তাই উপজেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ওমর ফারুক।
সহিংস এ ঘটনায় আহত তিন জনের মধ্যে মো. আলাউদ্দিন (৪৫) ও মো. সালাউদ্দিন (৫৫) কাপ্তাই উপজেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়া অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবদুল জলিলকে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে সজিবের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে মঙ্গলবার রাতেই তার সমর্থকরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরে বিক্ষোভ করেন। এ সময় কাপ্তাই থানার ওসি মো. নাসির উদ্দীনের নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনতাসির জাহান, কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রওশন আরা রব, কাপ্তাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাঈনুল হোসেন চৌধুরী হাসপাতালে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করেন।
এছাড়া গতকাল বুধবার সকালে নতুন বাজার এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন সজিবের সমর্থকরা। তারা নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করেন।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রতিদ্বন্দ্বী দুই ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ ও মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বাদল পরস্পরকে দায়ী করেন।
কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সজিব মেম্বারের সঙ্গে কারো বাকবিতন্ডা হয়নি। তিনি মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আক্তারের সঙ্গে আলাপ করছিলেন। ওই মুহূর্তে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সজিবের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
অপর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বাদল বলেন, সজিবসহ ২০ জনের একটি গ্রæপ রাতে মা বেকারিতে এসে আমার কর্মীদের অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। পরে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও সংঘর্ষ হয়। সজিবরাই গায়ে পড়ে তাদের সঙ্গে ঝগড়া করে।
রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান ও জেলা পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেন বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর মোদ্দাছ্ছের হোসেন জানান, দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির পর সংঘর্ষ হয়। এ সময় একজন ইউপি সদস্য মারা যান। ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ কাপ্তাই পাঠানো হবে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মো. আরিফুল ইসলাম বাবুসহ (২৫) ৭ জনকে আটক করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
কাপ্তাই থানার ওসি মো. নাসির উদ্দিন বলেন, কাপ্তাই নতুন বাজারে ‘মা বেকারি’তে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিউদ্দিন পাটোয়ারী বাদলের সমর্থকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় সজিবের। এ সময় বাদলের লোকজন লাঠি ও লোহার রড নিয়ে হামলা করে। তারা সজিবের মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।