কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত কুমার বিশ্বজিতের ছেলে

22

পূর্বদেশ ডেস্ক

কানাডার টরন্টোয় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত বাংলাদেশের সঙ্গীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমারের অবস্থা সংকটাপন্ন। দুর্ঘটনায় তার শরীরের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। স্থানীয় সময় সোমবার রাত সাড়ে ১১টায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতথ্য নিশ্চিত করে কুমার বিশ্বজিতের পারিবারিক সূত্র জানায়, মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আহত নিবিড়ের শরীরে একটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। আরও দুটি অস্ত্রোপচার করতে হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গুরুতর আহতাবস্থায় নিবিড় কুমারকে ইটোবিকো হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর দুইবার তার অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে নিবিড়কে ইটোবিকো হাসপাতাল থেকে সেন্ট মাইকেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
কানাডার টরেন্টোর হাইওয়ে ৪২৭-এর দুনদাস স্ট্রিট ওয়েস্টে গাড়িটি দুর্ঘটনার শিকার হয়, এসময় গাড়িটি চালাচ্ছিলেন কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমার। খবর সিবিসি নিউজ।
এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিবিড় কুমার গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও একই দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। কানাডার প্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশি জানান, নিহত তিন শিক্ষার্থী হলেন, শাহরিয়ার খান, অ্যাঞ্জেলা বাড়ৈ ও আরিয়ান দীপ্ত।
এদিকে ছেলের দুর্ঘটনার খবর শুনে মঙ্গলবার দিবাগত রাতেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে করে কুমার বিশ্বজিৎ ও তার স্ত্রী নাঈমা সুলতানা কানাডার উদ্দেশে রওয়ানা হন। যাওয়ার আগে ছেলে নিবিড়ের পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য ভক্ত ও শুভাকাক্সক্ষীদের প্রার্থনা করার অনুরোধ করেছেন দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। ইতোমধ্যে গতকাল বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় কুমার বিশ্বজিতের মেয়ে কানাডায় পৌঁছেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, প্রথম অস্ত্রোপচার শেষে নিবিড় কুমারকে ১৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
মঙ্গলবার কানাডাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সিবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, স্থানীয় সময় সোমবার রাতে অন্টারিও প্রদেশের ডান্ডাস স্ট্রিট পশ্চিম হাইওয়ে ৪২৭-এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অপর জনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, চারজন যাত্রী নিয়ে একটি গাড়ি খুব দ্রæত গতিতে ৪২৭ সাউথ বাউন্ড হাইওয়ে ডানডাস এক্সিটের দক্ষিণ দিকে যাচ্ছিল। হঠাৎ গাড়িটি র‌্যাম্প ছেড়ে একটি কংক্রিটের প্রাচীরের ওপর দিয়ে খাদে গিয়ে পড়ে অন্য কংক্রিটের দেওয়ালে বিধ্বস্ত হয়। এসময় গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়।
এক কানাডিয়ান কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফায়ার ডিপার্টমেন্ট ঘটনাস্থলে ছিল। আগুনে ভস্মীভূত হওয়ার আগে সেই গাড়ি থেকে চার যাত্রীকে বের করতে সক্ষম হয়েছিল।
ঘটনাস্থলেই পেছনের সিটে থাকা দুইজনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। সামনের সিটে বসা যাত্রীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিলে তাকেও মৃত ঘোষণা করা হয়- ওই কর্মকর্তা যোগ করেন।
একটি টুইট বার্তায় অন্টারিওর প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় শিকার ওই গাড়িটিতে থাকা চার জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় টরন্টোতে বসবাস করছিলেন।
অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ (ওপিপি) জানায়, টরন্টোর হাইওয়ে ৪২৭-এর দুনদাস স্ট্রিট ওয়েস্টে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ সময় গাড়িটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল। সড়ক বিভাজকে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি উল্টে আগুন ধরে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন। তার বয়স ২০ বছর। অন্য দুজনের বয়স ২০ ও ১৭ বছর। আর আহত শিক্ষার্থীর বয়স ২১ বছর। তিনিই গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। হতাহতদের পরিবারকে দুর্ঘটনার বিষয়টি জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।