কাজে আসেনি ‘ছাড়’ উল্টো এক বছরে বাড়ল ১৯.৩%

15

পূর্বদেশ ডেস্ক

খেলাপি ঋণ পুনর্গঠন, পুনঃতফসিল, আংশিক এককালীন পরিশোধের মত ছাড় ও সুবিধা দেওয়ার পরও চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের তিন মাসের চেয়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা; শতকরা হারে এই হিসাব ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
গতকাল রবিবার ঋণের হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে রয়েছে।
এ হিসাবে ২০২১ সালের মার্চের তুলনায় চলতি বছর মার্চে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার এ প্রবণতা সহজেই কমবে না বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ ও সাবেক তত্ব্াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ঋণ খেলাপিদের যতদিন সুবিধা দেওয়া হবে ততদিন বাড়বেই। তাদের তো সুদ মওকুফও করে দেওয়া হয়’।
সুদ মওকুফ ও খেলাপিদের ছাড় দিয়ে আদায় বেড়েছে বা খেলাপি কমেছে এমন নজির নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় কী শাস্তি দেওয়া যায় তা বের করতে হবে। তাদের জামানত বিক্রি করে আদায় করতে হবে’।
খেলাপি ঋণ বাড়ার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল বলেন, ‘কোভিড-১৯ এ ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রণোদনার ঋণ আদায় ও নিয়মিত ঋণের বকেয়া পরিশোধে ছাড় দেওয়া হয়।
১৫ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়েও ঋণকে নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়। তা অনেকেই নিতে পারেননি। আবার গত প্রান্তিকে ঋণ বিতরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার মন্দ ও সন্দেহযুক্ত ঋণের উপর কিন্তু সুদযুক্ত হয়েছে। এসব মিলিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে’।
অর্থনীতি স্বাভাবিক হলে খেলাপি ঋণ আদায় বেশি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
৩ মাসে নতুন ঋণ ২৮ হাজার কোটি টাকা দেশের ব্যাংকিং খাতে ২০২১ সালের মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৫ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে তা বেড়ে গত মার্চে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। করোনা ভাইরাস মহামারির প্রেক্ষাপটে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের নানা নীতি সুবিধা দেওয়ার পরও গত এক বছরে খেলাপি ঋণের মোট পরিমাণ বেড়েছে ১৮ হাজার ৩৫৫ কোটি টাকা (১৯ দশমিক ৩০ শতাংশ)।
অপরদিকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে মোট খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। এ হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থায় খেলাপি ঋণে বেড়েছে ১০ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা (৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ)।
সবশেষ হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংক থেকে দেওয়া মোট ঋণের মধ্যে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ শেষে মোট ঋণের স্থিতি ছিল ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১৩ লাখ ১ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। এ হিসাবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২৭ হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা।