কলেরার প্রাদুর্ভাবের ঝুঁকিতে আছে মারিউপোল: সতর্ক করল যুক্তরাজ্য

11

ইউক্রেইনের দক্ষিণাঞ্চলীয় নগরী মারিউপোল বড় ধরনের কলেরা প্রাদুর্ভাবের মুখে আছে। নগরীর চিকিৎসা সেবা পতনের দ্বারপ্রান্তে চলে যাওয়ায় এ ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে বলে সতর্ক করেছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রুশ বাহিনীর কয়েকমাসের অবিরাম বোমা হামলার পর ইউক্রেইনের মারিউপোল বন্দর নগরীর পতন হয়।
নগরীটির নির্বাসিত উপমেয়রও বলেছেন, মারিউপোলে এখনও ১ লাখ মানুষ আছে। তারা কলেরার প্রাদুর্ভাবের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকিতে আছে। এর আগে গতমাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডবিøউএইচও) ইউক্রেইন ইন্সিডেন্ট ম্যানেজার দোরিত নিতজান একই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, কয়েক সপ্তাহের অবরোধ এবং ভারি বোমার্বর্ষণের পর রাশিয়া বাহিনীর দখলে চলে যাওয়া মারিউপোল এখন অধিকৃত একটি এলাকা এবং সেখানে কলেরার ঝুঁকি আছে। এরপর শুক্রবার সর্বশেষ গোয়েন্দা তথ্যের বরাতে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় মারিউপোলে কলেরা দেখা দেওয়ার ঝুঁকির কথা জানাল। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রাশিয়া ইউক্রেইনে তাদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে মৌলিক জনসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
মারিউপোলে নিরাপদ, বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। চিকিৎসাসেবাও মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় কলেরার প্রাদুর্ভাব নগরীর পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাবে বলে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় সতর্ক করেছে। মারিউপোলের কলেরার এমন ঝুঁকিতে পড়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছে বিবিসি। খবরে বলা হয়েছে, গত মাসে পূর্ব ইউক্রেইনের স্বঘোষিত দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক জানিয়েছিল, যুদ্ধে মারিউপোলের ৬০ শতাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। এর মধ্যে ২০ শতাংশ এখনও ‍পুনর্র্নিমাণ করা যায়নি। কিন্তু মারিউপোলের উপমেয়রের কথা অনুযায়ী, নগরীটিতে এখনও ১ লাখ মানুষ বাস করছে। আর নগরীর বাড়িঘরের ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও অনেক মৃতদেহ চাপা পড়ে আছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি আছে।
তাছাড়া, নগরীর মূল পানি সরবরাহ ব্যবস্থা এরই মধ্যে নর্দমা থেকে দূষিত হয়ে পড়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। নগরীর মেয়রের উপদেষ্টা পেত্রো আন্দ্রিউশেঙ্কো বলেছেন, সোমবার ইউক্রেইনের টিভিতে বলা হয়েছে, মারিউপোলের মানবিক পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাচ্ছে। কোনওরকম রোগ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নগরীটি বন্ধ করে দেওয়াও খুবই ‘রূঢ় পদক্ষেপ’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বুধবার এক টেলিগ্রাম পোস্টে তিনি বলেন, মারিউপোলের ঘরবাড়ির ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে এখনও শত শত মৃতদেহ পাওয়া যাচ্ছে। তবে লেফট ব্যাংক এলাকায় মৃতদেহ তল্লাশি আর করা হচ্ছে না বলে বৃহস্পতিবার জানান পেত্রো।
তিনি বলেন, রুশ দখলদ্বার বাহিনী বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিতে শুরু করেছে এবং ধ্বংসস্তুপ থেকে মৃতদেহের সন্ধান করতে দিচ্ছে না। ওদিকে, রাস্তায় ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে খাবার পাওয়া যাচ্ছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয় বলেও জানান পেত্রো।