কর্ণফুলী-হালদার দূষণরোধে মাঠে নামছে ওয়াসা

33

নগরীর পানি চাহিদা পূরণের মূল ভরসাস্থল দুইটি নদী। একটি কর্ণফুলী ও অন্যটি হালদা নদী। বর্তমানে চট্টগ্রাম ওয়াসা এই দুই নদীর পানি পরিশোধনের মাধ্যমে সরবরাহ করছে নগরীতে। ভবিষ্যত সব পরিকল্পনাও এই দুই নদীকে ঘিরেই। কিন্তু নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে কর্ণফুলী ও হালদা দূষিত হচ্ছে। এই দূষণ রোধ করতে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রচারণায় নামছে। কিছুদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রচারণা শুরু করবে।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, ওয়াটার রিসার্চ সেল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। রিসার্চ সেল এ বিষয়ে কাজ করবে। নদীকে আমাদের বাঁচাতে হবে। নদী না বাঁচলে এতগুলো মানুষের পানির চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। তাছাড়া ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার আমরা সম্পূূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা করছি।
এদিকে বিশুদ্ধ পানি পেতে নগরবাসীকে প্রতিনিয়ত নানা দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। ওয়াসার চলমান প্রকল্পের কাজেও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া পানি নিয়ে নেই কোনো গবেষণা। যার কারণে ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার নিয়েও কোনো তথ্য নেই ওয়াসার কাছে। তবে ওয়াসার ৫৩তম বোর্ড সভায় দেশের প্রথমবারের মতো একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হিসাবে গবেষণা সেল গঠনের সিদ্ধান্ত আসে। প্রকল্প বাস্তবায়নে অব্যবস্থাপনা দূর করা, পানি সংকট লাঘব আর সড়ক খোঁড়াখুঁড়িতে জনভোগান্তি কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে এই গবেষণা সেল গঠন করা হলেও এর মাধ্যমে সুদুর প্রসারী ফল আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সদস্য সাংবাদিক মহসীন কাজী বলেন, নগরীর পানির চাহিদা হালদা ও কর্ণফুলী নদী থেকেই পূরণ করা হয়। এই দুইটি নদী যদি কোনো কারণে মাত্রাতিরিক্ত দূষিত হয়, তাহলে চট্টগ্রামবাসীকে একটি ভয়াবহ অবস্থায় পড়তে হবে। এই দুইটি নদীকে বাঁচাতে হবে। প্রাথমিকভাবে ওয়াসা হালদা ও কর্ণফুলী নদীর দূষণ রোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য বিলবোর্ড স্থাপন করবে। ক্রমান্বয়ে আরো কিছু কার্যক্রম হাতে নেওয়া হবে। গবেষণা সেল বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে কাজ করবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরে মানুষ ক্রমাগত বাড়ছে, সেইসাথে পানির চাহিদাও বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা কিভাবে পূরণ হবে সে বিষয়ে ওয়াসার কোনো গবেষণা সেল নেই। পানির বিদ্যমান আধারগুলো সংরক্ষণ এবং নতুন নতুন উৎস সৃষ্টির বিষয়ে ওয়াসায় কোনো গবেষণা হয় না। রিচার্স সেল চালু হলে সেখানে গবেষণা হবে এবং তারা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেবে।
বর্তমানে নগরীতে দৈনিক ৫০ কোটি লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে চট্টগ্রাম ওয়াসা সরবরাহ করছে ৩৬ কোটি লিটার পানি। ওয়াসার গ্রাহক রয়েছেন ৭১ হাজার ১৩০ জন। এদের মধ্যে ৬৪ হাজার ১৯ জন গ্রাহক আবাসিক। বাকি সাত হাজার ১১১ জন অনাবাসিক। শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে সুয়্যারেজ প্রকল্পের কাজও। এ অবস্থায় ওয়াসার রিসার্চ সেল বা গবেষণা সেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদুল আলম বলেন, আমাদের পানির মূল উৎস কর্ণফুলী ও হালদা। এই দুইটি নদী রক্ষা করা অপরিহার্য। দুই নদীকে রক্ষার জন্য কি কি পদক্ষেপ নেয়া যায় তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। মানুষকে সচেতন করার মাধ্যমে পানির দূষণ কমাতে হবে। সেজন্য সচেতনতার উপর বেশি জোর দেয়া হবে।