কর্ণফুলীতে নৌকা আনারসের লড়াই আগামীকাল

31

আবেদ আমিরী, কর্ণফুলী

নব সৃষ্ট কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের নির্বাচন আগামিকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল সোমবার প্রচার-প্রচারণার শেষ দিনে উপজেলা আরো উৎসবমূখর হয়ে উঠে। বিএনপিসহ অন্য দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় তফশিলের পর উৎসবমূখর ছিল না উপজেলায়। তবে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ফারুক চৌধুরীর বিপক্ষে থানা ৪ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ দলের একটি অংশের সর্বশেষ অবস্থান পরিবর্তিত হয়ে নৌকার পক্ষে আসায় গত বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতি পাল্টে উৎসবমূখর হয়ে উঠে। উপজেলার অভিমানী ৪ চেয়ারম্যানকে ডেকে স্থানীয় এমপি ও ভূমিমন্ত্রী নৌকার পক্ষে কাজ করার জন্য নির্দেশনার পর তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ শুরু করে।
অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আলীও আনারস নিয়ে কোমর বেঁধে নেমেছেন নির্বাচনের মাঠে। এর ফলে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ মুহূর্তে এসে জমে উঠেছে।
এদিকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশনও।
জানা গেছে, প্রতিটি ঘরেই এখন নির্বাচনী আমেজ। আওয়ামী লীগের পাশাপাশি স্বতন্ত্র ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা দিন-রাত এক করে মাঠ সরগরম করে তুলেছেন। এ কারণে নির্বাচনী আমেজ ইতোমধ্যে ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। প্রার্থীরা এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি হওয়াসহ নানাভাবে ভোটারদের কাছাকাছি চলে গেছেন। প্রার্থীরা নিজ নিজ কৌশলে নিজের উপস্থিতি জানান দিচ্ছেন। পাড়া-মহল্লা আর চায়ের দোকানগুলোতেও এখন আলোচনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে। কে হচ্ছেন উপজেলার চেয়ারম্যান তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন।
ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিএনপিসহ অন্য দলগুলো নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় এবার বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় চেয়ারম্যান হিসেবে আবারো সুযোগ তৈরি হয় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ফারুক চৌধুরীর। কিন্তু তার সাথে উপজেরার ৫টি ইউনিয়নের চার চেয়ারম্যানের চরম বিরোধ রয়েছে। এ কারণে তারা চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত মোহাম্মদ আলীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে টেনে আনেন। বর্তমানে নির্বাচনের মাঠে চেয়ারম্যান পদে ফারুক চৌধুরী ও মোহাম্মদ আলী ছাড়া আর কোনো প্রার্থী নেই। মোহাম্মদ আলী ফরম সংগ্রহের শেষ দিনের মাত্র এক দিন আগে ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়ে নির্বাচনে প্রাণ আনেন।
দলীয় প্রতীক পাওয়ার পর তাকে নিয়ে উপজেলায় এযাবৎকালের সবচে বড় শোডাউন করেন ৪ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও তাদের সমর্থকেরা। এরপর থেকে মোহাম্মদ আলীর পক্ষে চারজন চেয়ারম্যান ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে অল্প সময়ে ভোটারদের কাছাকাছি পৌঁছে দেন। ওই সময় নৌকার প্রার্থীর প্রচারণা অনেকটা ভাটা পড়ে। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার থেকে নৌকার প্রচার-প্রচারণায় জোয়ারের সৃষ্টি হয়।
তবে থেমে থাকেনি আনারসের প্রচার-প্রচারণা। ভোটারদের ধারণা দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোহাম্মদ আলী ভোটের দিন কেন্দ্র দখলসহ নানা আশঙ্কার কথা জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তারা প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপনের দাবিও জানান। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সিসিটিভি স্থাপনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে ভোট কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা জোরদারে আশ্বস্থ করে।
এ বিষয়ে ফারুক চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতীক নৌকাকে মূল্যায়ন করবে কর্ণফুলীবাসী। নৌকার প্রার্থী হিসেবে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। নির্বাচনের মাঠে এখনো সুষ্ঠু পরিবেশ আছে এবং তা শেষ পর্যন্ত বজায় থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।