করোনা পরবর্তীও মানবসেবায় অগ্রণী ভূমিকা রাখছে লায়ন্স ক্লাব

7

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক লায়ন্স জেলা ৩১৫-বি৪ বাংলাদেশের দুদিনব্যাপী বার্ষিক কনভেনশন উপলক্ষে গতকাল বুধবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা গভর্নর লায়ন আল সাদাত দোভাষ বলেছেন, চট্টগ্রামে নিরবচ্ছিন্ন সামাজিক কর্মকাÐের ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে লায়ন্স ক্লাব। বিগত ২৫ বছর ধরে চট্টগ্রামের প্রতিটি উপজেলার পাশাপাশি বৃহত্তর চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে নানামুখি সেবা কর্মকান্ড পরিচালনা করেছে আন্তর্জাতিক এ সংগঠনটি। বিশেষ করে আই ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, সিএলএফ কমপ্লেক্স মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন, অন্ধত্ব নিবারণ, ওয়ান ক্লাব ওয়ান চাইল্ড, ডায়াগনস্টিক ট্রিটমেন্ট এন্ড এডুকেশন, ক্ষুধা নিবারণ, ডায়াবেটিস সচেতনতা, খৎনা ক্যাম্প, সাদাছড়ি দিবস উদযাপন, লায়ন্স স্বর্ণপদক প্রদান, স্কলারশিপ ট্রাস্টের মাধ্যমে বিভিন্ন সেবা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে করোনার ভয়াবহ সময়ে করোনা সাপোর্ট সেন্টার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অগ্রণী ভ‚মিকা রেখেছে লায়ন্স ক্লাব।
আগামী ২০ ও ২১ মে ২৫তম জেলা কনভেনশন অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (আজ) বিকাল ৪টায় নগরীর জিইসি মোড়স্থ জিইসি কনভেনশন সেন্টার থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হবে।জেলা গভর্নর লায়ন আল সাদাত দোভাষ বলেন, সারাবছর আমাদের স্থায়ী বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দুস্থ মানুষজনকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের ইনডোর ও ভ্রাম্যমাণ সেবা, লায়ন্স জেনারেল হাসপাতাল, আনোয়ারা তাহের ফিজিওথেরাপি সেন্টার, বৃক্ষরোপণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমও পরিচালনা করেছে লায়ন্স জেলা।
প্রেস কনফারেন্স কমিটির চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও কমিটির সেক্রেটারি লায়ন সাংবাদিক হাসান আকবরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সদ্য প্রাক্তন জেলা গভর্নর লায়ন ডা. সুকান্ত ভট্টাচার্য, জেলা গভর্নর (ইলেক্ট) লায়ন শেখ সামশুদ্দিন আহমেদ সিদ্দিকী, প্রথম ভাইস জেলা গভর্নর (ইলেক্ট) লায়ন এমডিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, প্রাক্তন গভর্নর লায়ন এম এ মালেক, লায়ন রূপম কিশোর বড়–য়া, লায়ন নাজমুল হক চৌধুরী, লায়ন সিরাজুল হক আনসারী, লায়ন কামরুন মালেক, কেবিনেট সেক্রেটারি লায়ন এস এম আশরাফুল আলম আরজু, কেবিনেট ট্রেজারার লায়ন আবু বক্কর চৌধুরী, কনভেনশন কমিটির চেয়ারম্যান লায়ন অশেষ কুমার উকিল, সেক্রেটারি লায়ন ইমতিয়াজ ইসলাম, জিএলটি কো-অর্ডিনেটর লায়ন জি কে লালা প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে জেলা গভর্নর বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকাময় দিনগুলোতে ও মানব ইতিহাসের ক্রান্তিলগ্নে মানুষ যখন বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে জীবন সংগ্রামের দিক নির্দেশনা পাচ্ছিল না সেই ক্রান্তিলগ্নে ১৯১৭ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরের মানব হিতৈষী বীমা কর্মকর্তা মেলভিন জোন্স এর উদ্যোগে এবং নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক এবং অরাজনৈতিক যে সেবা সংগঠন যাত্রা শুরু করেছিল, তা হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সর্ববৃহৎ সেবা সংগঠন আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। এই দেশে মানুষের হাজারো সমস্যা। এই সমস্যা কিছুটা নিরসনকল্পে বাংলাদেশের এক মহামানব যিনি এ বীর চট্টলার সূর্য সন্তান, এ দেশে লায়নিজমের প্রবক্তা লায়ন মরহুম এম.আর. সিদ্দিকী, তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানে ১৯৫৮ সালে লায়নইজমের সূচনা করেন। সে ধারাবাহিকতায় বর্তমানে চট্টগ্রামে ৮৪টি সক্রিয় লায়ন্স ক্লাবের ২৬০০ জন সদস্য নিরলস সেবা কর্মকাÐ পরিচালনা করে চলেছেন।
চলতি বছর সম্পাদিত বিভিন্ন কার্যক্রমের উল্লেখ করে জেলা গভর্নর বলেন, এ বছর আমার ডাক ছিল, ‘সার্ভ ফর ম্যানকাইন্ড’ অর্থাৎ মানবতায় মানবসেবায়। সে ডাক বাস্তবায়নে জেলার ৮৪টি ক্লাব সারাবছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন নানামুখি সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, আয়োজক কমিটির কো-চেয়ারম্যান লায়ন মোহসেন আলী মহসিন, লায়ন নিশাত ইমরান, সদস্য লায়ন বদিউর রহমান, লায়ন কাশেম শাহ প্রমুখ।