করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সবসময় চট্টগ্রামবাসীর পাশে থাকবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। গতকাল বুধবার সকালে চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালে ৫০ শয্যার করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ড এবং নবনির্মিত হাসপাতাল ভবন উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বন্দরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আপনাদের সাহসী পদক্ষেপের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ হয়নি। এমন প্রতিকূল অবস্থায়ও বন্দরকে সচল রেখেছেন আপনারা, এজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। আর চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মরত এবং তাদের পরিবারের কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে অথবা উপসর্গ থাকলে চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
তিনি বলেন, ১০ বছরে চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্বের সেরা ১০০ কনটেইনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দরের তালিকায় ৬৪ তম অবস্থানে এসেছে। আমরা চাই ৩০ থেকে ৫০ তম অবস্থানের মধ্যে চলে আসতে। আর বন্দরের আওতায় বাস্তবায়ন হচ্ছে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর, বে টার্মিনাল, পিসিটিসহ অনেক প্রকল্প। তাই বন্দরের জন্য শুধু উদ্ধারকারী জাহাজ নয়, হেলিকপ্টার কেনারও পরিকল্পনা রয়েছে। এসময় তিনি বুডিগঙ্গায় লঞ্চডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর দোষীদেরকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান। নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের একটি ল্যাব দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে গেছি। বাংলাদেশের মানুষের সাহস এবং সরকারের সাহসী ব্যবস্থাপনার কারণে এ সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে। করোনায় সারাবিশ্বের মত আমাদের অর্থনীতিতে যে ধাক্কা লেগেছে তা কাটিয়ে এগিয়ে যেতে চেষ্টা চলছে। চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের লাইফ লাইন। চট্টগ্রামের মানুষের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ বক্তব্য রাখেন। এসময় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন হাসপাতাল বিল্ডিংয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ফেব্রূয়ারিতে। সম্প্রতি এ হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে কোভিড-১৯ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রোগীদের চিকিৎসার জন্য বন্দর হাসপাতালের নতুন ভবনের সি-ব্লকে হাই ফ্লো অক্সিজেন সরবরাহ সিষ্টেম সমন্বিত ২৫ বেডের করোনা ওয়ার্ড এবং ২৫ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করা হয়। এখানে আইসিইউ ওয়ার্ড চালু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
করোনা ওয়ার্ড ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসা কাযর্ক্রম পরিচালনার জন্য ইতিপূর্বে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে ১৩ জন ডাক্তার ও ৩৬ জন নার্সসহ মোট ১৫৯ জন চিকিৎসক ও কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে হাই ফ্লো অক্সিজেন। সংযোজন করা হয়েছে ফ্লোমিটার, ৬টি হাই ফ্লোন নেজাল ক্যানোলা, অক্সিজেন কনসেনট্রেট ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি। ইতোমধ্যে বন্দরে ১৬৬ জন সদস্য করোনা শনাক্ত হয়েছেন। পাঁচশ’রও বেশি হোম কোয়ারেনটাইনে বা আইসোলেশনে আছেন। মারা গেছেন পাঁচজন।
এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল কর্তৃক চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা ভাইরাস সনাক্ত করার লক্ষ্যে গত ২৩ মে হতে নমুনা সংগ্রহ করে সরকার নির্ধারিত হাসপাতালে পাঠানোর কার্যক্রম শুরু করে।